Advertisement
E-Paper

করোনা-হানায় মৃত্যু এক হাজার ছাড়াল চিনে

বস্তুত চিনের বাইরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে গত কয়েক দিনে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২৭
মুখোশ পরেই চলছে কেনাকাটা।—ছবি এএফপি।

মুখোশ পরেই চলছে কেনাকাটা।—ছবি এএফপি।

আশঙ্কা ছিলই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিনে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেল গত কালই। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশেই মৃত্যু হয়েছে ১০৮ জনের। নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২,৪৭৮ জন মানুষ। সোমবার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২,৬৩৮। এই পরিস্থিতিতে আজ আরও এক বার মুখ খুলেছেন প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। জানিয়েছেন, এই ভাইরাস মোকাবিলা ও নিয়ন্ত্রণে তাঁদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সদর্থক ফল মিলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, আজ এই ভাইরাসের একটি আনুষ্ঠানিক নাম দেওয়া হয়েছে— কভিড-১৯ (Covid-19)।

গত কাল রাতে বেজিংয়ে পৌঁছেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় পরবর্তী জরুরি পদক্ষেপগুলি নিয়ে তাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছেন ওই দলের প্রতিনিধিরা। তবে চিনের বাইরে অন্য দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আজও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানোম ঘেব্রিইয়েসাস। গত কালই তিনি বিষয়টিকে ‘হিমশৈলের চূড়া’ মাত্র বলে টুইট করেছিলেন। আজ তিনি আবারও টুইট করে বলেছেন, চিনের বাইরের দেশগুলি এখন থেকেই অতিরিক্ত সতকর্তা না নিলে এর ফল মারাত্মক হতে পারে। তাঁর আশঙ্কা, যিনি কোনও দিন চিনে যাননি, খুব শীঘ্রই এমন মানুষের দেহেও এই ভাইরাসের লক্ষণ মিলতে পারে। ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে কোয়ারেন্টাইনের সময় এখনও ১৪ দিনই রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর আরও বক্তব্য, বিশ্বে মোট ১৬৮টি পরীক্ষাগার রয়েছে, যেখানে এই ভাইরাস চিহ্নিতকরণের জন্য যথাযথ পদ্ধতি মেনে চলা হয়।

বস্তুত চিনের বাইরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে গত কয়েক দিনে। এর আগে বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে মোট ৩০০টি সংক্রমণের খবর মিললেও এখন সেই সংখ্যাটা ৩৪০ ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে আমেরিকাতেও আজ নতুন করে সংক্রমণের খবর মিলেছে। তবে চিনের শাংশি প্রদেশে গত কাল ৩৩ বছরের এক আক্রান্ত মহিলা এক সুস্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে বলে জানিয়েছে চিনের সংবাদমাধ্যম। ৩৭ সপ্তাহের

ওই সদ্যোজাতের দেহে করোনভাইরাসের লক্ষণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে নিশ্চিত হতে আরও কয়েক দিন পরে ওই শিশুটির ফের পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

করোনার আতঙ্কের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে প্রমোদতরীর পর্যটন ব্যবসায়। সিঙ্গাপুরের একটি প্রমোদতরীকে যেমন নিজেদের দেশের বন্দরে ঢুকতে দিতে চাইছে না তাইল্যান্ড সরকার। এর আগেও জাপান, ফিলিপিন্স, তাইওয়ানের মতো বেশ কয়েকটি দেশ। তাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই প্রমোদতরীর কোনও যাত্রীর শরীরে করোনার চিহ্ন না-মিললেও তারা ঝুঁকি নিতে চাইছে না।

এই অবস্থায় চিনের উহানে আটকে থাকা প্রায় ১৮০ জন নেপাল নাগরিককে এয়ারলিফ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সরকার। প্রথমে পাকিস্তানের মতোই নিজেদের দেশের আটকে পড়া নাগরিকদের চিনেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নেপাল সরকার। তবে আজই জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই উহান থেকে যাত্রীদের তুলতে রওনা হবে নেপাল বায়ুসেনার একটি বিমান।

চিন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভারতের মণিপুরে যাওয়া ১৮৭ জন ও নাগাল্যান্ডে যাওয়া ৪২ জনকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে সেখানকার সরকার। অবশ্য এখনও কারও দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি। নাগাল্যান্ডের ৪২ জনের মধ্যে ৭ জনকে নিজের ঘরেই পৃথক করে রাখা হয়েছে। দিনে দু’বার করে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কেরলে ভাইরাস আক্রান্ত প্রথম পড়ুয়ার শরীরে আর এই রোগের লক্ষণ নেই বলে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছিল। ওই ছাত্রী উহান থেকে ভারতে ফিরেছিলেন সম্প্রতি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্র জানিয়েছে, আপাতত ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’র ত্রিশূর শাখার পরীক্ষাগারে ওই ছাত্রীর স্বাস্থ্য

পরীক্ষা হয়েছে। পুণের পরীক্ষাগার থেকে রিপোর্ট না-আসা পর্যন্ত চিকিৎসকেরা ওই ছাত্রীকে পুরোপুরি ভাইরাস-মুক্ত বলতে পারছেন না বলে আজ জানানো হয়েছে।

Coronavirus Health China Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy