Advertisement
১১ মে ২০২৪
BRICS

ব্রিকসে সন্ত্রাস-প্রশ্নে চাপ বাড়াবে দিল্লি

স্বাভাবিক ভাবেই আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে নজর থাকবে এই গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য চিনের দিকে।

স্বাভাবিক ভাবেই আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে নজর থাকবে এই গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য চিনের দিকে।

স্বাভাবিক ভাবেই আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে নজর থাকবে এই গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য চিনের দিকে। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৫:৫৫
Share: Save:

করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলে নয়াদিল্লিতে বসতে চলেছে ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বৈঠক। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, রাশিয়া এবং চিনের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সমন্বয় এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু করতে চলেছে নয়াদিল্লি।

স্বাভাবিক ভাবেই আসন্ন ব্রিকস সম্মেলনে নজর থাকবে এই গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য চিনের দিকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত নভেম্বরে ভিডিয়ো মাধ্যমে ব্রিকস বৈঠকের পরে শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা নিয়েই একটি দীর্ঘ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। তাতে রাশিয়া, চিন এবং ভারত প্রত্যেকেই ছিল স্বাক্ষরকারী। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই চাল ছিল অত্যন্ত কৌশলী। কারণ এই ঘোষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে চিনের ঘাড়েও আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলার দায় এসে পড়েছে। নভেম্বরের সেই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন কতদূর হল, তা এর পরের ব্রিকস বৈঠকে খতিয়ে দেখা হবে। সে ক্ষেত্রে অভিযোগের তর্জনী পাকিস্তানের দিকে ঘোরানো সহজ হবে নয়াদিল্লির পক্ষে।

বর্তমানে চিন-পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতার যে অক্ষটি জোরদার হচ্ছে, তাতে উভয় রাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্তে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের সীমান্তের উগ্রতায় বেজিংয়ের অদৃশ্য ভূমিকা রয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে নয়াদিল্লির। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিকস-কে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরোধী মঞ্চ করে তুলতে পারলে অন্তত চিন-পাকিস্তান অক্ষটিকে কিছুটা হলেও আতসকাচের নিচে নিয়ে আসা যাবে বলেই বিশ্বাস সাউথ ব্লকের।

সন্ত্রাস বিরোধিতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সংস্কার এবং বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক সংযোগ বাড়ানোর বিষয়গুলি অগ্রাধিকার পাবে ব্রিকস বৈঠকে। কূটনীতিবিদদের মতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উত্তপ্ত পরিস্থিতির সাপেক্ষে কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই গোষ্ঠীর বৈঠক। পূর্ব লাদাখে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে তখন কিছুটা হলেও সম্পর্কের উত্তাপ কমাতে সাহায্য করেছিল নভেম্বরের ব্রিকস বৈঠক। যেখানে পর্দায় দু’পাশে মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।

সূত্রের মতে, রাশিয়ার উপস্থিতি ভারত-চিন সম্পর্কের বাষ্পকে বার করে দিতে সাহায্য করেছে গত কয়েক মাসে। ব্রিকস যার অন্যতম মঞ্চ। নভেম্বরের আগেও গত বছর ভারত-চিন উত্তেজনার মধ্যেই বসেছিল ব্রিকসভুক্ত রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক। কূটনীতিবিদদের মতে, নয়াদিল্লির কাছে মস্কোর
ভূমিকা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ সাউথ ব্লক ভাল করে জানে যে বেজিং যদি কারও কথায় কিছুটা গুরুত্ব দেয়, সেটা হল মস্কো। দুই দেশের বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য স্বার্থ পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি মস্কো চায়, তাদের সামরিক পণ্যের বিশাল দুই ক্রেতা ভারত এবং চিনের মধ্যে অস্থিরতা যেন মাত্রা না ছাড়ায়। রাশিয়া আন্তর্জাতিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষা তথা নিজের প্রভাব আরও সংহত করতে ব্রিকস-এর মতো সংগঠনগুলিকে কাজে লাগাতে উন্মুখ। ভারত সেটাকে জাতীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে চায় বলেই জানানো হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BRICS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE