Advertisement
E-Paper

রহস্যময় অসুস্থতা! কিউবায় দূতাবাস কর্মীদের নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় আমেরিকা ও কানাডা

কিন্তু কী কারণে এমনটা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি চিকিৎসকেরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২৮
কিউবার হাভানায় মার্কিন দূতাবাস। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস-এর সৌজন্যে।

কিউবার হাভানায় মার্কিন দূতাবাস। ছবি: উইকিমিডিয়া কমনস-এর সৌজন্যে।

রহস্যজনক সব অসুস্থতা! যার পিছনে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোনও কারণ।

কেউ হঠাৎ করে কানে কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না। কেউ বা রাতে ঘুমোতে পারছেন না এক ফোঁটাও। কেউ আবার আচমকাই অ়জ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। কারও কারও কানের ভিতর বিভিন্ন সুপারসনিক শব্দ।অনেকে মনোসংযোগ করতে পারছেন না। কারও আবার স্মৃতিশক্তিটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। মনে করতে পারছেন না সাধারণ শব্দ। কারও সারা ক্ষণ বমি পাচ্ছে। কারও প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব।

আশ্চর্য হওয়ার আরও কারণ রয়েছে। যাঁরা এই সব ভয়ানক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই পেশাগত ভাবে কূটনীতিবিদ।তাঁদের বেশির ভাগইহয় আমেরিকা, নয়তো কানাডার নাগরিক। এবং প্রত্যেকেই কর্মসূত্রে কিউবার দূতাবাসে কাজ করেন। গত দু’বছরে এমন রহস্যজনক অসুস্থতার শিকার হয়েছেন ২৪ জন মার্কিন এবং ১০ জন কানাডীয় কূটনীতিবিদ। কিন্তু কী কারণে এমনটা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বুঝে উঠতে পারেননি চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন, ঝোড়ো সফরে সুইডেনে মোদী

সংবাদ সংস্থা এপি-র খবর অনুযায়ী, ওই কূটনীতিকদের কয়েক জন চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, তাঁরা একটা যন্ত্রণাদায়ক শব্দ অল্প সময়ের জন্য শুনেছেন। এবং তার পর থেকে কোনও কানেই আর কিছু শুনতে পাচ্ছেন না। তাঁরা রাতে ঘুমোনোর সময় ওই শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। তাতেই ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু, একই সময়ে ওই ঘরে, এমনকী, একই বিছানায় শুয়ে থাকা অন্য জন সেই শব্দ শুনতে পাননি।

আরও পড়ুন, তিমির দেহে ৬৪ পাউন্ড প্লাস্টিক! চিন্তা বিজ্ঞানীদের

পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিন’-এর ‘সেন্টার ফর ব্রেন ইনজুরি অ্যান্ড রিপেয়ার’ বিভাগের প্রধান ডগলাস স্মিথ ওই ২৪ জন মার্কিন কূটনীতিকের চিকিৎসা করেন। ওই রোগীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘মাথায় খুব জোর আঘাত লাগলে যে ধরনের রোগী আমাদের ক্লিনিকে আসেন, ওঁদের দেখে তেমনটাই মনে হয়েছিল। কিন্তু, ওঁরা কেউই মাথায় আঘাত লাগার কথা বলেননি।’’ স্মিথের সহযোগীরা ওই কূটনীতিকদের মস্তিষ্কের একটা অংশে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। যে শ্বেতবস্তু মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে সেখানেই পরিবর্তনটা হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা মনে করছিলেন, কোনও তীব্র শব্দের (সনিক) আক্রমণের শিকার ওই কূটনীতিকরা। কিন্তু, তার সামান্যই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু, বিজ্ঞানীদের দাবি, মস্তিষ্কের ওই পরিবর্তন করার ক্ষমতাকোনও শব্দতরঙ্গেরই নেই। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, এটা গণ হিস্টিরিয়াও হতে পারে। কিন্তু, চিকিৎসকেরা সেই মত উড়িয়ে দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রেও তাঁদের দাবি, গণ হিস্টিরিয়ায় মস্তিষ্কের শ্বেতবস্তু পরিবর্তন হওয়ার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তাঁদের মতে, এটা সম্পূর্ণ শারীরিক ব্যাপার। এর সঙ্গে ওই জায়গার পরিবেশের সম্পর্ক আছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত।

এমন পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কিউবায় তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করছে। এমনকী, হাভানা থেকে তাদের দূতাবাস কর্মীদের একটা বড় অংশকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে, হাভানায় নিযুক্ত ওই মার্কিন কূটনীতিকদের স্বাস্থ্যগত জটিলতার বিষয়টিই তুলে ধরেছে তারা।তাদের দাবি, ওই কূটনীতিকরা শত্রুর আক্রমণের শিকার। কিন্তু, এর পিছনে কাদের হাত রয়েছে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি মার্কিন প্রশাসন।কূটনীতিকরা ঠিক কী ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তা-ও পরিষ্কার করে জানানো হয়নি। এফবিআই-এর হাতেও তদন্তের ভার দেওয়া হয়নি। প্রায় ৫৪ বছর পর, ২০১৫-য়তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়েকিউবায় দূতাবাস চালু করেছিল আমেরিকা।

কানাডাও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, হাভানার দূতাবাস কর্মীরা তাঁদের পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে রাখতে পারবেন না। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁদের অনেককেদেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে।

Cuba Illness America Embassy Diplomats Canada
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy