হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সংঘাতে নতুন মাত্রা যুক্ত হল। সোমবার (স্থানীয় সময় অনুসারে) হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষকে নতুন একটি চিঠি পাঠিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। তাতে বলা হয়েছে, সরকারের দেওয়া শর্তাবলি না-মানলে বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার জন্য সকল সরকারি সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সংবাদ সংস্থা এপি অনুসারে, মার্কিন শিক্ষা দফতর থেকে ওই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বারকে। সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলি পূরণ না-হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। যদিও পড়ুয়াদের শিক্ষা এবং বেতন বাবদ সরকারি সহায়তার ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে ট্রাম্পের শিক্ষা দফতর।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আমেরিকার অন্যতম অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ডের এই সংঘাতের গোড়ায় রয়েছে ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতি। বর্তমানে পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার অন্যতম ‘বন্ধু রাষ্ট্র’ ইজ়রায়েল। সম্প্রতি ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ পরিস্থিতিকে ঘিরে আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ইহুদি-বিদ্বেষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ মার্কিন প্রশাসনের। একই সঙ্গে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সঠিক পদক্ষেপ করছেন না বলেও অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ বন্ধ করার জন্য কী কী করণীয়, সে বিষয়ে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু সরকারের দেওয়া শর্তাবলি মানতে রাজি হচ্ছে না হার্ভার্ড।
আরও পড়ুন:
সরকারের চাপানো ওই শর্তগুলির বিরোধিতা করে সেই সময় হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, ওই শর্তগুলি মানলে শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার সঙ্গে আপস করা হবে। ওই শর্তগুলি সাংবিধানিক অধিকারের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন অ্যালেন। তিনি লিখেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় নিজের স্বাধীনতাকে সঁপে দেবে না বা নিজের সাংবিধানিক অধিকারকেও ত্যাগ করবে না।” শর্ত মানতে রাজি না-হওয়ায় হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে আগেও বেশ কিছু ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। হার্ভার্ডকে ২২০ কোটি ডলারের সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকার শিক্ষা দফতর। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৬ কোটি ডলারের একটি চুক্তিও স্থগিত রাখা হয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের করমুক্ত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাও প্রত্যাহার করে নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।