E-Paper

মামদানির দিকেই পাল্লা ভারী, মেনে নিচ্ছেন ট্রাম্প-ও

জনমতসমীক্ষা বলছে, কুয়োমো ও স্লিওয়ার থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন মামদানি। সর্বশেষ জনমত সমীক্ষায় মামদানির পক্ষে সমর্থন ৪৬ শতাংশ। কুয়োমো রয়েছেন ২৮ শতাংশে, আর স্লিওয়ার অবস্থান ১৮ শতাংশে।

অভীক সানোয়ার রহমান

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৬:৩৪
(বাঁ দিকে) জ়োহরান মামদানি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) জ়োহরান মামদানি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

নিউ ইয়র্কের রাজপথ এখন ভোটের পোস্টারে মোড়া। কাল, শনিবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদের আর্লি ভোটিং। এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর সংখ্যা তিন— রিপাবলিকান দলের কার্টিস স্লিওয়া, ডেমোক্র্যাট দলের জ়োহরান মামদানি এবং নির্দল প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমো। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সাহার কথায়, “এই শহর যেমন বৈচিত্রময়, মেয়র পদে সেই বৈচিত্রের প্রতিফলনই দেখা যাচ্ছে।”

এ দিকে জোর গুঞ্জন, স্লিওয়া কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়ে নাম প্রত্যাহার করতে পারেন। যদি শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়, তা হলে লড়াই হবে সরাসরি ডেমোক্র্যাট দলের নবীন নেতা এবং প্রাক্তন ডেমোক্র্যাট গভর্নরের মধ্যেই। এবং জনমতসমীক্ষা বলছে, কুয়োমো ও স্লিওয়ার থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন মামদানি। সর্বশেষ জনমত সমীক্ষায় মামদানির পক্ষে সমর্থন ৪৬ শতাংশ। কুয়োমো রয়েছেন ২৮ শতাংশে, আর স্লিওয়ার অবস্থান ১৮ শতাংশে। বিশ্লেষকদের মতে, স্লিওয়া যদি সত্যিই সরে দাঁড়ান, তবে তাঁর ভোট কুয়োমোর দিকে গেলে লড়াই আরও হাড্ডাহাড্ডি হতে পারে। তবে পাল্লা যে মামদানির দিকেই ভারী, তা স্পষ্ট। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “নিউ ইয়র্ক যে এ বার এক কমিউনিস্ট মেয়র পেতে চলেছে, তা প্রায় নিশ্চিত।”

ট্রাম্পের কথায়, “যে মাপকাঠিতেই দেখুন না কেন, মামদানি অনেক এগিয়ে। রিপাবলিকান প্রার্থীকে সরিয়ে দিলেও এতে মামদানির হার আটকানো যাবে না।” ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, ভোটে জিতলে তিনি কি মামদানির সঙ্গে দেখা করবেন? ট্রাম্প বলেন, “নিউ ইয়র্ক আমার খুব প্রিয় শহর।অবশ্যই যাব। মেয়রের সঙ্গে দেখা করব।” তবে একই সঙ্গে কিছুটা হুমকির সুরে প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভোটে জিতলেও সব কিছুর জন্যই হোয়াইট হাউসের অনুমোদন লাগে... আমি বরং একজন ডেমোক্র্যাট মেয়র মেনে নিতে পারি, কিন্তুকমিউনিস্ট নয়।”

এ বার মেয়র ভোটে রিপাবলিকান দল ৭১ বছর বয়সি স্লিওয়াকে প্রার্থী করলেও হেভিওয়েট প্রার্থী যে অন্য দু’জন, তা স্পষ্ট হয়ে যায় দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত বিতর্কসভায়। সেই বিতর্ক-মঞ্চের মাঝখানে দাঁড়িয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সি মামদানি, আর তাঁর দু’পাশ থেকে রাজনৈতিক বাউন্সার আসছিল দুই বর্ষীয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছ থেকে। বিতর্কের প্রথমেই প্রার্থীদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয় ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গে। মামদানি স্পষ্ট জানান, গাজ়ায় মানবাধিকার রক্ষা করাই কূটনৈতিক সমাধানের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। কুয়োমোর পাল্টা দাবি, “নিউ ইয়র্কের মেয়রকে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক নয়, প্রশাসক হতে হবে।” বিতর্কে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ওঠে মামদানির পুলিশের সংখ্যা কমানোর প্রস্তাব নিয়ে। শহরবাসীর বড় অংশের আশঙ্কা, এতে অপরাধ বাড়তে পারে।

বিতর্কের পরে নিউ ইয়র্কে জোর গুঞ্জন, স্লিওয়া নাকি কুয়োমোকে সমর্থন জানিয়ে নাম প্রত্যাহার করতে পারেন। এই প্রসঙ্গে গড়িয়াহাট থেকে আসা দীর্ঘদিন ম্যানহাটনের বাসিন্দা অশোক রক্ষিত বলেন, “স্লিওয়া রিপাবলিকান প্রার্থী, দল তাঁকে ছাড়বে না। এতে পুরনো রাজনৈতিক নিয়ম ভেঙে যাবে।”

২৫ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত আগাম ভোট। ভোটগ্রহণ ৪ নভেম্বর। ফলে আর কয়েক দিনেই বোঝা যাবে, নিউ ইয়র্ক নতুন পথে হাঁটবে, নাকি পুরনো অভিজ্ঞতার হাতেই শহর আবার নিরাপত্তার ছায়া খুঁজে নেবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

america USA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy