Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ফের যৌন কেচ্ছা ফাঁস, ট্রাম্প তবু বেপরোয়াই

জোর করে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার শোনা গেল, ‘‘হাঙরের মতো গিলে খাওয়াটাই ট্রাম্পের স্বভাব।’’

নর্থ ক্যারোলাইনার সভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স।

নর্থ ক্যারোলাইনার সভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:১০
Share: Save:

জোর করে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। এ বার শোনা গেল, ‘‘হাঙরের মতো গিলে খাওয়াটাই ট্রাম্পের স্বভাব।’’ যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে এ বার মুখ খুললেন সামার জারভোস ও ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন নামের দুই প্রাক্তন মডেল। ফের কেচ্ছায় জড়ালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে তালিকা। এ দিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর মাসখানেকও বাকি নেই। এরই মধ্যে আবার ফাঁস হয়ে গিয়েছে বিতর্কিত সেই ভিডিও টেপ, যেখানে ট্রাম্প নিজেই নিজের ‘লালসার’ কথা জানিয়েছেন। ধনকুবের তবু বেপরোয়াই। গত কাল ফ্লোরিডার এক সভায় দাঁড়িয়ে দিব্যি জানিয়ে দিলেন, সবটাই ভুয়ো। নর্থ ক্যারোলাইনার অন্য একটি সভায় আবার ট্রাম্প বলেন, ‘‘প্রচারে বাগড়া দিতেই এ সব মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। সবটাই বিরোধীদের চক্রান্ত।’’ প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে আঁতাঁত করেই গণমাধ্যমের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে চলেছে বলে দাবি তাঁর। এমনকী এ-ও বললেন, ‘‘আপনারা বিশ্বাস করুন, যাঁরা এ সব অভিযোগ করছেন, তাঁরা আদৌ ততটা আকর্ষণীয় নন। কখনও আমার পছন্দের তালিকাতেও ছিলেন না।’’

তা হলে হাঙরের মতো গিলে খাওয়ার অভিযোগ উঠছে কেন? ট্রাম্পকে নিশানায় রেখে গত কাল প্রথম বোমাটি ফাটান সামার জারভোস। বছর দশ-বারো আগেও তিনি ট্রাম্পের একটি রিয়্যালিটি শোতে আসতেন। জারভোসের অভিযোগ, ট্রাম্পের খেয়ালেই তিনি চাকরি খোয়ান। প্রভাবশালী ট্রাম্পের সঙ্গে তবু যোগাযোগ রেখে চলছিলেন— ভাল একটা কাজ জোটানের আশায়। আর বিপত্তি তাতেই। সময়টা ২০০৭। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জারভোস বলেন, ‘‘উনি নিজেই আমাকে বিলাসবহুল একটি হোটেলে ডাকেন। দু’-চার কথার পরেই জোরাজুরি শুরু করেন। আপত্তি সত্ত্বেও জড়িয়ে ধরেন, আর হাত দিতে শুরু করেন আমার শরীরের সর্বত্র। ঠিক যেন মাঝ সমুদ্রের রক্তের স্বাদ পাওয়া একটা হাঙর গিলে খেতে চাইছে আমাকে।’’ তার পর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ন’বছর। এতদিন কেন এ নিয়ে মুখ খোলেননি? এর উত্তরে প্রাক্তন মডেল বলেন, ‘‘উনি এত নামজাদা, তাই ভয় পেয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের মঞ্চে ট্রাম্পকে একের পর এক মিথ্যে বলতে দেখে আর থাকতে পারলাম না। এই লোকটা যে ভোটে দাঁড়াচ্ছে, ভাবতেই ঘেন্না হচ্ছে।’’ একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ক্রিস্টিন অ্যান্ডারসন। ঘটনাটি নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকের। ক্রিস্টিনের অভিযোগ, একটি নাইটক্লাবে নিয়ে গিয়ে তাঁকে হেনস্থা করেন ট্রাম্প। সেই রাতে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরা ‘ঘিনঘিনে’ ট্রাম্পকে তিনিও দেখতে চাইছেন না হোয়াইট হাউসে। রিপাবলিকান সূত্রের খবর, এই সব কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির জেরেই ট্রাম্পের দিক থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন রিপাবলিকান সমর্থকদের একটা বড় অংশ। প্রচারের শুরু থেকেই তাঁরা পাশে ছিলেন ধনকুবের প্রার্থীর। ভোটের তহবিল গড়তে বিস্তর ডলারও ঢেলেছেন। এ বার তাঁরাই অনুদান ফেরত চাইছেন। হতাশ এক সমর্থকের কথায়, ‘‘ভাবতেই পারছি না, এত দিন কী ভাবে এমন একটা বিকৃত যৌন মানসিকতার লোককে অন্ধের মতো সমর্থন করে এসেছি! মোহ কেটেছে। সব অনুদান ফেরত চাইছি।’’

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যদিও ট্রাম্পের এই বাড়বাড়ন্তের জন্য রিপাবলিকান পার্টিকেই দুষছেন। তাঁর দাবি, দল চুপ থাকছে বলেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন নিউ ইয়র্কের এই ধনকুবের প্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald trump sex scandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE