একাধিক বার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজেই নিজেকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিদার বলেছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী শুক্রবার এই বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপকের নাম ঘোষণা হতে চলেছে। তার আগে বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের তরফে ট্রাম্পের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হল, ‘দ্য পিস প্রেসিডেন্ট’, অর্থাৎ শান্তির প্রেসিডেন্ট! নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার দু’দিন আগে এই পোস্টকে ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার ট্রাম্প নিজেও তাঁর পুরস্কার প্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে মুখ খুলেছেন।
বুধবার ট্রাম্প আরও এক বার দাবি করেন, তিনি বিশ্বে সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছেন। ওই তালিকায় রয়েছে ভারত-পাক সংঘাতও। আরও একটি যুদ্ধ থামানোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প। একই সঙ্গে ট্রাম্প আশাবাদী যে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিও তিনি সামাল দিয়ে দেবেন। নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আমার কোনও ধারণা নেই (পুরস্কার পাবেন কি না, তা নিয়ে)।” তার পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, কী ভাবে তাঁরা সাত যুদ্ধ থামিয়েছেন, তা ব্যাখ্যা করবেন আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো। এই প্রসঙ্গেই আত্মপ্রশংসার সুরে ট্রাম্পের সংযোজন, “আমার মনে হয় না ইতিহাসে কেউ এত যুদ্ধ থামিয়েছে।”
তবে এত কিছু দাবি করার পরেও নিজের নোবেল প্রাপ্তির সম্ভাবনা নিয়ে খুব একটা নিশ্চিত নন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “হয়তো ওরা (নোবেল কমিটি) আমাকে এটা না-দেওয়ার একটা কারণ খুঁজে নেবে।” নোবেল কমিটির উপর ট্রাম্পের গোসা অবশ্য নতুন নয়। গত জুন মাসেই তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর চার-পাঁচ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত। একই সঙ্গে অনুযোগের সুরে ট্রাম্প বলেছিলেন, “ওরা (নোবেল কমিটি) আমায় নোবেল শান্তি পুরস্কার দেবে না। কারণ, এটা কেবল উদারপন্থী (লিবারাল)-দের দেওয়া হয়।” তা ছাড়া পূর্বসূরি বারাক ওবামাকে কেন ওই পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়েও অতীতে প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাম্প।
গত ২০ জুন ভারত-পাক যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে তাঁর নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেই অসাধারণ কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প। কৌশলে তিনি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা করিয়েছেন। পরিস্থিতির খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে বৃহত্তর সংঘাত এড়ানো গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের বিপর্যয় আটকানো গিয়েছে।’’ ভারত অবশ্য বরাবরই বলে এসেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত থামাতে তৃতীয় কোনও পক্ষের কোনও ভূমিকা নেই।