ডোনাল্ড ট্রাম্প
দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে নতুন নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে পাকিস্তানকে ফের ‘জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়’ বলে বিঁধলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে আফগানিস্তানে আরও সক্রিয় হতে চাপ দিলেন ভারতকেও।
দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা ঢেলে সাজতে চাইছে আমেরিকা। কাল সেই প্রসঙ্গেই টিভি-বক্তৃতায় নয়া নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে সেনা থাকবেই। জয় সুনিশ্চিত করতেই সেখানে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’
কাদের সঙ্গে লড়াই? প্রেসিডেন্ট জানান, আফগানিস্তান থেকে তিনি প্রথমে সেনা সরানোর কথাই ভেবেছিলেন। কিন্তু সেই শূন্যস্থানে যদি জঙ্গিরা থাবা বসায়! এই প্রসঙ্গেই ইসলামাবাদকে বিঁধতে শুরু করেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা চালিয়ে ওখানেই নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা পাচ্ছে জঙ্গিরা।’’ অবিলম্বে এই অবস্থান বদল না করলে প্রতিরক্ষা-সহ নানা ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে আর্থিক বরাদ্দ বন্ধেরও হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: কাবুল নীতিকে স্বাগত দিল্লির
ট্রাম্পের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নয়াদিল্লির সঙ্গে ওয়াশিংটনের কৌশলগত সম্পর্ক জোরালো করা প্রয়োজন। পূর্বসুরি বারাক ওবামার পথে হেঁটে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতকে আগেই প্রধান সহযোগী দেশের মর্যাদা দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, আমেরিকার সঙ্গে ব্যবসা করে প্রচুর লাভ করে ভারত। তাই আফগানিস্তানকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আরও উদ্যোগী হওয়া উচিত।
আফগানিস্তান নীতি ঘোষণার এক ফাঁকে ট্রাম্প বলেন, ‘‘ব্যর্থ বিদেশনীতির কারণেই যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হয়। আর তাতে বিস্তর অর্থ, শক্তি তো বটেই, অকারণে অনেক প্রাণও যায়। এ নিয়ে মার্কিন নাগরিকদের হতাশাটা আমি বুঝি। তাই নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেই আফগানিস্তানের মতো দেশে দ্রুত সমাধান আনতে চাইছি আমি।’’
ট্রাম্পের এমন আশ্বাসে আশার আলোই দেখছে কাবুল। আফগানিস্তানে জঙ্গিদের মদত দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানকে দোষারোপ করে আসছেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ট্রাম্প সুর চড়াতেই ঘানির মুখপাত্র বলেন, ‘‘পাকিস্তানকে এমন স্পষ্ট হুঁশিয়ারি আগে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট দেননি। আমেরিকার দক্ষিণ এশিয়া নীতির এটাই সব চেয়ে ইতিবাচক দিক।’’
পাক প্রশাসন যথারীতি অস্বস্তিতে। ট্রাম্পের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলনেতা ইমরান খানও। তাঁর দাবি, অকারণে নিজেদের ভ্রান্ত আফগান নীতির দোষ ইসলামাবাদের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টুইটারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকার লড়াইয়ে আমাদেরও ৭০ হাজার প্রাণ গিয়েছে। ওদের চাপে পড়েই আফগানিস্তানে আমরা দু’টো যুদ্ধ লড়েছি। তাতে অর্থ আর প্রাণহানি ছাড়া আর কিছু হয়নি। এ বার অন্তত আমাদের বোঝা উচিত যে, ডলারের লোভে আর কখনও ওদের হয়ে যুদ্ধে যাওয়া উচিত নয় আমাদের।’’ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে চিনও জানিয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসলামাবাদ বরাবরই সামনের সারিতে থেকেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy