বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ কি আরও তীব্রতর হচ্ছে? আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক হুঁশিয়ারি যেন সেই দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেই মত অনেকের। এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পণ্যের উপর আরও বেশি পরিমাণ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প। শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়ন নয়, কানাডার বিরুদ্ধেও একই হুমকি দিয়ে রাখলেন তিনি। তাঁর দাবি, আমেরিকার প্রধান বাণিজ্য অংশীদারেরা জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে তাঁরা বাণিজ্যে বাধা পাচ্ছেন। তাই তার প্রতিশোধ নিতে হবে!
ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের নতুন হুঁশিয়ারি প্রকাশ্যে এল। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘ইইউ যদি আগামী মাসে কিছু মার্কিন পণ্যের উপর পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা থেকে সরে না আসে, তবে আমরাও একই পথে হাঁটব।’’
অন্য দিকে, কানাডার সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ চলছেই আমেরিকার। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পরই কানাডাও মার্কিন পণ্যের উপর একই পরিমাণ পাল্টা শুল্ক ধার্য করেছে। তার পরই ট্রাম্প আবার শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি দিলেন। তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘‘যাঁরা আমাদের উপর যত পরিমাণ শুল্ক চাপাবে, আমরাও তাঁদের উপর তত পরিমাণ শুল্ক চাপাব।’’
শুল্ক, পাল্টা শুল্ক নিয়ে দর কষাকষিতে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জ। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস শুল্কযুদ্ধ নিয়ে সকলকে সতর্ক করেছেন। তাঁর উদ্বেগ, দেশগুলি যদি শুল্কযুদ্ধের পরিস্থিতিতে পড়ে, তবে সকলেই হারবে! এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমরা একটি বিশ্ব অর্থনীতিতে বাস করি। সব কিছুই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। মুক্ত বাণিজ্যের পরিস্থিতি থাকার সবচেয়ে বড় সুবিধা, এতে সব দেশই উপকৃত হয়। কিন্তু যদি কোনও বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হয়, তবে আমার বিশ্বাস এতে সকলেই হেরে যাবে।’’
আরও পড়ুন:
ট্রাম্প দ্বিতীয় বার আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পরে তাঁর শুল্কনীতি ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে। কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের বিভিন্ন পণ্যের উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শুধু কানাডা, মেক্সিকো বা চিন নয়, পরে ধাপে ধাপে বিশ্বের অন্য দেশগুলির উপরও ট্রাম্প তাঁর নতুন শুল্কনীতি চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন। বাদ পড়েনি ভারতও। ট্রাম্প প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন, তিনি ‘টিট ফর ট্যাট’ নীতিতে বিশ্বাসী। যে সব দেশ মার্কিন পণ্যের উপর যত পরিমাণ শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও সেই সব দেশের পণ্যের উপর তত পরিমাণ আমদানি শুল্ক ধার্য করবে।