পাহাড় ও সাগরে ঘেরা মেক্সিকো দেশটিতে দেখা যায় স্পেনীয় ও জনজাতির মিশ্র সংস্কৃতি। এখানকার আরাধ্যা দেবী মেরি গুয়াদালুপের মহাদেশে বেশ কয়েক বছর হল অনাবাসী বাঙালিরা দুর্গাপুজোর আয়োজন করছেন। যুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাস পেরিয়ে আজকের মেক্সিকো এক ঝকঝকে দেশ। বিশ্বায়নের ফলে এ দেশে প্রচুর ভারতীয় শিল্প ও বাণিজ্যের বিনিয়োগ হয়েছে। মেক্সিকো সিটি, কেরেতারো, গুয়াদালাহারার মতো শহরগুলিতে অসংখ্য বাঙালি রয়েছেন।
দেশ থেকে ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকলেও বছরের এই সময়ে সকলে মিলে দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে উঠি। সারা বছর ধরে এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। গত কয়েক বছর ধরে দেশের রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে বেশ কয়েকটি দুর্গাপুজো হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার বড় শহরের মতো এখানে বিশাল মাপের সর্বজনীন পুজো করা সম্ভব হয় না। সাধারণত ৭/৮টি পরিবার মিলে ঘরোয়া ভাবে একটা পুজো করেন। মেক্সিকো সিটি থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরে গুয়াদালাহারা বলে একটি শহর আছে। সেখানে রয়েছে বেশ কিছু ভারতীয় সংস্থার শিল্পতালুক, যেখানে কর্মরত অনেক ভারতীয়, তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু বাঙালিও। সেই শহরেও বেশ কয়েকটি ঘরোয়া পুজো হয়।
মেক্সিকো সিটি থেকে শ’দুয়েক কিলোমিটার দূরে আমাদের এই কেরেতারো শহর। এখানকার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এ বছর প্রথম দুর্গাপুজো করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই শহরে প্রায় একশোটি বাঙালি পরিবার রয়েছে। কিন্তু শুধু তাঁরা নন, পুজোয় অংশগ্রহণ করছেন অনাবাসী ভারতীয় এবং স্থানীয় মেক্সিকানেরাও। সে অর্থে এই পুজো সত্যিই ‘বিশ্বজনীন’।
ইতিমধ্যেই মেক্সিকোর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাঙালিরা জানিয়েছেন, কেরেতারোর পুজো দেখতে আসছেন তাঁরা। আমরা আশা করছি ২৫০-৩০০ লোক সমাগম হবে। পুজো হবে ২ অক্টোবর। প্রতিমা নির্মাণ করছেন স্থানীয় এক বাঙালি শিল্পী। পুরোটাই রং, তুলি আর শোলার কাজের উপস্থাপনা। বসে ভোগ-প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। আমাদের আশা, লাতিন আমেরিকার বর্ণময় জীবনধারার সঙ্গে খাপ খেয়ে যাবে বাঙালির এই প্রাণের উৎসব।