Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Election Process In Luxembourg

ভোট দেবেন না? দিতে হতেই পারে জরিমানা

এখানে ভোটের আগে আপনি রাস্তায় কোনও মিছিল দেখতে পাবেন না, শুনতে পাবেন না লাউডস্পিকারে কান-ফাটানো চিৎকার। দেওয়াল লিখন বা দেওয়ালে পোস্টার সাঁটারও কোনও রেওয়াজ নেই এখানে।

—প্রতীকী চিত্র।

জেসমীন রাজদেরকর
লুক্সেমবুর্গ শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৩
Share: Save:

কয়েক দিনের মধ্যে ভারতে নির্বাচন-পর্ব শুরু হয়ে যাবে। তার প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যেই সাজসাজ রব পড়ে গিয়েছে। টিভি খুললেই প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতাদের চিৎকার আমাদেরও কানে এসে পৌঁছচ্ছে। ইউরোপের ছোট্ট দেশ লুক্সেমবুর্গ খুবই শান্ত ও নিরিবিলি। তেমনই শান্তিপূর্ণ এখানকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া।

এখানে ভোটের আগে আপনি রাস্তায় কোনও মিছিল দেখতে পাবেন না, শুনতে পাবেন না লাউডস্পিকারে কান-ফাটানো চিৎকার। দেওয়াল লিখন বা দেওয়ালে পোস্টার সাঁটারও কোনও রেওয়াজ নেই এখানে। প্রচারের জন্য শুধু নির্ধারিত কিছু স্থানে প্রার্থীর বা দলের অস্থায়ী হোর্ডিং লাগিয়ে দেওয়া হয়। তা ছাড়া, ডাকযোগে ভোটারদের কাছে প্রচার পুস্তিকা পাঠানোর ব্যবস্থাও রয়েছে।

আমেরিকা বা ইউরোপের অনেক দেশের মতো লুক্সেমবুর্গেও নির্বাচনের আগে টেলিভিশন বা রেডিওতে প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্কের আয়োজন করা হয়। এই বিতর্কসভাগুলি এ দেশের মানুষ খুব আগ্রহ ও উৎসাহ নিয়ে দেখেন বা শোনেন।

এ দেশের নিয়ম অনুযায়ী, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিককে ভোট দিতে হবে। না হলে জরিমানা করা হতে পারে। তবে এত বছর এখানে রয়েছি, কখনও কারওকে ভোট না-দেওয়ার জন্য জরিমানা করা হয়েছেবলে শুনিনি।

কেউ যদি ভোট দিতে না পারেন, তা হলে স্থানীয় কমিউন বা পুরসভায় স্পষ্ট করে কারণ জানাতে হবে। কেউ যদি অসুস্থ হন, তা হলে তাঁকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন বা মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিতে হবে। যাঁরা ভোট দিতে যেতেপারবেন না, তাঁদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থাও রয়েছে। নির্বাচনী কর্তৃপক্ষকে জানালে তাঁরা আগাম ব্যালট পেপার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন, এবং সেই ভোটারকে ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে ব্যালট পূরণ করে ডাকযোগে ফেরত পাঠিয়ে দিতে হয়।

বিদেশে বসবাসকারী লুক্সেমবুর্গের নাগরিকেদের জন্যও ভোটদানের ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁরা অনলাইনে আবেদন করে তাঁদের নাম-ঠিকানা পাঠাতে পারেন। তাঁদের কাছেও ডাকযোগে ব্যালট পেপার পৌঁছে যাবে। এবং ভোটের কমপক্ষে ৪০ দিন আগে সেই ব্যালট পেপার ফেরত পাঠাতে হবে দেশে।

আর যাঁরা এ দেশেই বসবাস করছেন, তাঁদের জন্য ভোটের দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। যে কোনও বৈধ পরিচয় পত্র নিয়ে গেলেই স্বেচ্ছাসেবকেরা আপনাকে নির্ধারিত কক্ষে নিয়ে যাবেন। ভোট পর্ব মিটে যাবে কয়েক মিনিটেই।

গত বছর অক্টোবরেই এ দেশে সাধারণ নির্বাচন হয়ে গেল। দেখলাম, সবাই আর পাঁচটা সাধারণ কাজের মতোই ভোট দেওয়ার কাজটা সহজেই সেরে ফেললেন। কোনও বুথ দখল, বোমবাজি বা ছাপ্পা ভোট ছাড়াই।

ভারতে আসন্ন ভোটের দিনগুলিও নির্বিঘ্নে কাটবে, এই আশা করি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Process Luxembourg
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE