ছেলেটার বয়স তখন এক বছর আট মাস। কিছুমাত্র না ভেবে একরত্তিটার প্রাণ বাঁচাতে মা অপরিচিত এক নার্সের সঙ্গে তাকে তুলে দিয়েছিলেন ট্রেনে। ১৯৩৯ সালের জার্মানি থেকে ইংল্যান্ডের পথে। শিশুটির নাম পল আলেকজ়ান্ডার। এখন পল ৮১-র বৃদ্ধ। এত বছর পরে যিনি ফিরে দেখলেন ফেলে আসা পথটুকু। এ বার ট্রেনে নয়, সাইকেলে। সঙ্গে তাঁর ৩৪ বছরের এক ছেলে আর ১৫ বছরের এক নাতিও।
জার্মানিতে হিটলারের জমানায় এমন অসংখ্য ইহুদি শিশুর প্রাণরক্ষায় দেশ থেকে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তাদের বাবা-মা। প্রকল্পটির নাম ছিল ‘কিন্ডারট্রান্সপোর্ট।’ বিদেশে গিয়ে দু’এক বছরের মধ্যে কিছু শিশু ফের বাবা-মাকে খুঁজে পেয়েছিল। কেউ আবার পায়নি। পল প্রথম গোষ্ঠীতে পড়েন। রবিবার বললেন, ‘‘৭৯ বছর আগে ঘৃণার জার্মানি থেকে ইংল্যান্ডের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছেছিলাম। এত দিন পরে সেই পথে আবার... খুব অন্য রকম লাগছে। মনে হচ্ছে, হিটলারের কাছে আমার জবাব, বেঁচে আছি। একটা সুখী পরিবারের অংশ হয়ে। তার জন্য গোটা বিশ্বকেও ধন্যবাদ।’’
হাজার কিলোমিটারের পথ। আলেকজ়ান্ডার পরিবারের মতো আরও ৩৯ জন সাইকেল আরোহী এই পথ পাড়ি দিয়েছেন। বার্লিনের ফ্রিডরিশস্ট্রাস থেকে লন্ডনের লিভারপুল স্ট্রিট। এই আরোহীদের অনেকে সেই সময়ে উদ্ধার হওয়া শরণার্থী শিশুর বংশধর। অনেকে আবার ‘ওয়ার্ল্ড জিউইশ রিলিফ’-এর উদ্যোগে এই যাত্রায় যোগ দিয়েছেন সেই শিশুদের কথা মনে রেখে। উদ্যোগের শরিক রফি কুপার বলেছেন, ‘‘যে ভাবে ওই সময়ে বাচ্চাদের রক্ষা করা হয়েছিল, ভাবা যায় না। তাই আমাদের পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধা জানাতে এই যাত্রা।’’