Advertisement
E-Paper

শামিমাকে ঠাঁই দিল না ব্রিটেন

মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রশাসন তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে জেনে মর্মাহত শামিমা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫৬
মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রশাসন তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে জেনে মর্মাহত শামিমা।

মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রশাসন তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে জেনে মর্মাহত শামিমা।

কয়েক দিনের শিশুকে বুকে জড়িয়ে ব্রিটেনে, নিজের দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন আইএস জঙ্গির ঘরণী বছর উনিশের শামিমা বেগম। ১৫ বছর বয়সে ঘরছাড়া সেই তরুণীর কাহিনি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল দুনিয়া জুড়ে। কিন্তু মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রশাসন তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে জেনে মর্মাহত শামিমা। সিরিয়ার শরণার্থী শিবির থেকেই এক সাক্ষাৎকারে শামিমা জানিয়েছেন, তাঁর ও তাঁর ছেলের সঙ্গে অবিচার হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি কিছুটা হলেও মর্মাহত। খুবই হতাশা লাগছে। মনে হচ্ছে, আমার ও আমার সন্তানের সঙ্গে অবিচার হল।’’ আর এর জন্য সংবাদমাধ্যমকেই দায়ী করছেন তিনি। তাঁর দাবি, অনেককেই ব্রিটেন ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে তাঁর খবর ফলাও করে বার হওয়ায় কড়া পদক্ষেপ করেছে সরকার।

ফলে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চাইলেও আপাতত প্রশ্নের মুখে শামিমা ও তাঁর সন্তানের ভবিষ্যৎ।

জন্মসূত্রে বাংলাদেশি হলেও ইংল্যান্ডে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন শামিমা। জঙ্গি দলে যোগ দিতে ২০১৫ সালে দুই বান্ধবীর সঙ্গে সিরিয়া পালিয়ে যান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫। স্কুলপড়ুয়া। সিরিয়া গিয়ে ধর্মান্তরিত এক ডাচ জঙ্গিকে বিয়ে করে সংসার পাতেন। গত চার বছরে দু’বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কিন্তু অনাহার, অপুষ্টিতে মারা গিয়েছে দু’টি বাচ্চাই। কয়েক দিন আগে তৃতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এ বার যে কোনও মূল্য সন্তানকে বাঁচাতে চেয়ে দেশে ফেরার আর্জি জানিয়েছিলেন শামিমা। কিন্তু মঙ্গলবার ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব সাজিদ জাভিদ তরুণীর বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে জানান, শামিমার নাগরিকত্ব বাতিল করা হল। ব্রিটেনের মানুষের নিরাপত্তার খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে তারা।

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তরুণীর বাবা-মা। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, জনগণের স্বার্থে স্বরাষ্ট্র দফতর কারও নাগরিকত্ব বাতিল করতেই পারে। তার বিরুদ্ধে আদালতে পাল্টা আবেদন করা যায়। তবে শামিমার ক্ষেত্রে মামলার মেয়াদ দীর্ঘ কয়েক বছরও হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

এই পরিস্থিতি বিকল্প আশ্রয় খুঁজছেন শামিমা। তাঁর আইনজীবী জানান, শামিমার মা বাংলাদেশি। কিন্তু শামিমা কখনও সেখানে যাননি। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাওয়ার প্রশ্নই নেই। বরং তাঁর স্বামীর সূত্রে হল্যান্ডের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন তরুণী। শামিমার স্বামী সম্প্রতি সিরিয়াবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ওই যুবকের পরিবার হল্যান্ডে থাকে। স্বামীকে সিরিয়া থেকে হল্যান্ডের জেলে পাঠানো হলে সেখানেও অপেক্ষা করতে রাজি তিনি। তবে তাঁর ছেলের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি আরও জটিল।। শামিমার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার আগে ছেলেটি জন্মেছে। নিয়ম মতো, সে ব্রিটিশ নাগরিক। বাবার সূত্রে সে ডাচ এবং সম্ভবত বাংলাদেশের নাগরিকত্বের জন্যেও আবেদন করা যাবে। যদিও প্রশাসন চাইলে সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারে।

এখন ইরাক সীমান্ত ঘেঁষা সিরিয়ার বাঘুজ়ে একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন শামিমা। কিন্তু দেশে ফিরতে পারবেন কি না, তা আপাতত বিশ বাঁও জলে। প্রাক্তন কনজারভেটিভ স্বরাষ্ট্র সচিব কেন ক্লার্কের মতে, সিরিয়ার শরাণার্থী শিবিরে কয়েকশো বিদেশি জঙ্গি দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে।। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সে ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ আরও বাড়াতে পারে।

ISIS Migration Britain Shamima Begum Citizenship
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy