Advertisement
E-Paper

তিন মাসে চিনে তিন সংক্রমণ ঢেউয়ের আশঙ্কা

সরকারের দাবি, মৃত্যুর খবর এখন সেই অর্থে নেই। তবে এক সরকারি কর্তার থেকে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র নিউমোনিয়া ও শ্বাসপ্রশ্বাস-জনিত সমস্যায় মৃত্যুকে কোভিডে প্রাণহানি বলে গণনা করা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:২৫
 বুধবার চিনের হেবেই প্রদেশের ঝুয়োঝউ শহরের এক হাসপাতালে চলছে করোনা রোগীদের চিকিৎসা।

বুধবার চিনের হেবেই প্রদেশের ঝুয়োঝউ শহরের এক হাসপাতালে চলছে করোনা রোগীদের চিকিৎসা। ছবি: পিটিআই।

তিন বছর আগে এমনই এক ডিসেম্বরে চিনের উহান শহরে প্রথম শোনা গিয়েছিল ‘রহস্যময়’ জ্বরে মৃত্যুর কথা। রাতারাতি ‘তালাবন্ধ’ করে দেওয়া হয়েছিল গোটা একটা শহরকে। ক্রমে রোগ ছড়ায়, লকডাউনের সঙ্গে পরিচয় ঘটে গোটা পৃথিবীর, সংক্রমণ তালিকার শীর্ষ ওঠে আমেরিকা, ব্রাজিল, ভারতের মতো দেশের নাম। আড়ালে চলে যায় চিন। এ পর্যন্ত এ দেশের অতিমারি-পরিস্থিতি সম্পর্কে খুব সামান্য তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে। আর তা-ই হয়তো, অতিমারির ‘শেষ পর্বে’ বিপর্যস্ত চিন। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এই শীতে তিনটি কোভিড-ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে এ দেশে। নতুন মিউটেটেড করোনা স্ট্রেনের আঁতুড়ঘর হয়েউঠেছে চিন।

এ বছরের শেষার্ধে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই অতিমারি পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস একেবারে নিঃশেষ হবে না, পৃথিবীতে থেকে যাবে। ফলে একে নিয়েই বাঁচতে শিখতে হবে। সব দেশই কমবেশি এই তত্ত্বকে মান্যতা দিলেও চিন জ়িরো-কোভিড নীতি থেকে সরতে নারাজ ছিল।তারা জানায়, দেশ কোভিড-শূন্য না হওয়া ইস্তক তারা কোভিডবিধি শিথিল করবে না। সেই লক্ষ্যে কোয়রান্টিন শিবির, লকডাউন, মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি, গণপরীক্ষা সবই বজায় ছিল এ দেশে। বরং টিকাকরণের হার কম ছিল। যেটুকু টিকাকরণ হয়েছিল, তাতেও কম শক্তিশালী দেশীয় কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এর জন্য এ দেশে মানুষের শরীরে কোভিড রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়নি। তাঁদের উপযুক্ত টিকাকরণও হয়নি। এ অবস্থায় একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে আচমকাই দেশে সরকার-বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। উরুমছিতে কোয়রান্টিন থাকা একটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। সরকারি নিষেধাজ্ঞার জেরে বাড়ি থেকে বেরোতে না পেরে মৃত্যু হয় সেখানকার ১০ জন বাসিন্দার। সেই ঘটনার পরে জনসাধারণের বিক্ষোভের জেরে কোভিড নীতি শিথিল করতে বাধ্য হয় চিন সরকার। এবং সবশেষে আচমকা এই শিথিলতায় ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। সংক্রমণ বিশেষজ্ঞেরা (এপিডিমিয়োলজিস্ট) দাবি করেছেন, এই শীতেই তিন-তিনটি করোনা-ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে চিনে।

এত দিন করোনায় মৃত্যু নিয়ে নীরব ছিল চিন। কিন্তু এ বারে জানা গিয়েছে, চিনা প্রশাসন আসন্ন সংক্রমণ ঢেউ নিয়ে সতর্ক করেছে বাসিন্দাদের। ‘চাইনিজ় সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর প্রধান এপিডিমিয়োলজিস্ট উ জ়ুনইউ বলেছেন, ‘‘সাম্প্রতিক সংক্রমণ শীতে শীর্ষ ছোঁবে এবং তিন মাসে তিনটি ঢেউ এসে পড়বে। প্রথম ঢেউটি এখন থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি অবধি চলবে। দ্বিতীয়টি ঢেউটি আসবে ঠিক তার পরেই। ২১ জানুয়ারি চিনের লুনার নিউ ইয়ার উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবেন।’’ জ়ুনইউয়ের অনুমান, তৃতীয় ঢেউটি আসবে ফেব্রুয়ারির শেষে, চলবে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত। যখনমানুষ ছুটি কাটিয়ে ফের কাজে যাওয়া শুরু করবে।

সরকারের দাবি, মৃত্যুর খবর এখন সেই অর্থে নেই। তবে এক সরকারি কর্তার থেকে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র নিউমোনিয়া ও শ্বাসপ্রশ্বাস-জনিত সমস্যায় মৃত্যুকে কোভিডে প্রাণহানি বলে গণনা করা হচ্ছে। বাকি উপসর্গ ধরা হচ্ছে না। মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতেই এই ব্যবস্থা কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে শয্যা ফাঁকা নেই। স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকেরাও সংক্রমিত হয়েছেন। ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম বাড়ন্ত। ওষুধের দোকানগুলিতে চাপবাড়ছে। সরকারি হিসেবে দৈনিক সংক্রমণ ২০০০।

যদিও আশপাশের পরিস্থিতি বিচার করলে অগুনতি মানুষ করোনা-আক্রান্ত। গত সপ্তাহে জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনও স্বীকার করেছে, উপসর্গহীন সংক্রমণ প্রচুর। পরিস্থিতি নজরে রাখাই অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

COVID19 China COVID Cases Coronavirus Corona Test COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy