অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে অগ্নিকাণ্ডে বিপর্যস্ত ইবন অল-খাতিব হাসপাতালের একাধিক ওয়ার্ড। রবিবার বাগদাদে। রয়টার্স ।
বাগদাদের এক কোভিড হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম ১১০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
শনিবার রাতের ওই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা অল-খাধিমি। গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় তড়িঘড়ি বরখাস্ত করা হয়েছে বাগদাদের অল রুশাফা এলাকার স্বাস্থ্য দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কয়েক জন উচ্চপদস্থ আধিকারিককে।
বাগদাদের কাছে ইবন অল-খাতিব নামে ওই হাসপাতালের তৃতীয় তলে রয়েছে কোভিড ওয়ার্ডের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেখানেই অক্সিজেন সিলিন্ডার ফেটে প্রথমে আগুন লাগে। হাসপাতালে কোনও কার্যকরী অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না-থাকায় দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য তলেও। ধোঁয়া-আগুন দেখা দিতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রোগীদের দ্রুত সরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের সকলকে বাঁচানো যায়নি। এমন আশঙ্কাজনক ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষাক্ত ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে বাকিদের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার সময়ে হাসপাতালেই ছিলেন জনৈক আহমেদ জ়াকি। তাঁর ভাই ওই হাসপাতালেই ভর্তি। জ়াকি বললেন, ‘‘আগুন দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। দেখলাম, সকলে জানলা দিয়ে লাফাতে শুরু করেছে। ডাক্তারদেরও তিন তলা থেকে লাফাতে দেখলাম। ঝাঁপ দিয়ে গাড়ির উপরে আছড়ে পড়লেন ওঁরা।’’
করোনার দ্বিতীয় ঝড় আছড়ে পড়েছে ইরাকেও। প্রতিদিন গড়ে সে দেশে ৮ হাজার জন সংক্রমিত হচ্ছে। অথচ দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে। ইরাকের বেশির ভাগ হাসপাতালে অক্সিজেন জোগানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভরসা সেই সিলিন্ডার। ফলে ভেন্টিলেটর থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের স্থানান্তরিত করার সময়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অন্তত ২০০ জন রোগীকে নিরাপদে সরানো গিয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে আসার পরে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। এই ঘটনার মূলে যে গাফিলতি রয়েছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘কর্তব্যে গাফিলতি আর ভুল এক নয়। এটা অপরাধ। সকলকেই এর দায় নিতে হবে।’’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ঘটনায় দেশ জুড়ে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy