বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঢাকা-ইসলামাবাদের সম্পর্কে ‘শীতলতা’ কাটার ইঙ্গিত মিলেছিল। এ বার দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ‘স্বাভাবিক’ করতে বৈঠকে বসতে চলেছেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব মহম্মদ জসিমউদ্দিন এবং পাকিস্তানের বিদেশসচিব আমনা বালোচ। বৃহস্পতিবার এই বৈঠকটি হবে ঢাকায়। বৈঠকে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধিদল।
বাংলাদেশের বিদেশ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর পরে দুই দেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক হতে চলেছে। ওই সূত্রের খবর, বৈঠকে প্রায় সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে।
‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ শীর্ষক এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পাকিস্তানের বিদেশসচিব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহম্মদ ইকবাল হোসেন সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস-কে জানান, ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে আগ্রহী।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই বৈঠকের পর চলতি মাসেই বাংলাদেশ সফরে যেতে পারেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার। যদি দার বাংলাদেশে যান, তবে ২০১২ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় সাবেক পূর্ব পাকিস্তান। তৈরি হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। তার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দু’দেশের মধ্যে ফের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালু করতে পদক্ষেপ করেছে ইউনূসের প্রশাসন। পাকিস্তানের থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। জাহাজে করে সেই চাল পাঠিয়ে দেয় পাকিস্তান। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। পরে শাহবাজ় জানান, ইদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি দু’দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার বিষয়েও ইউনূসের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে পাকিস্তান সফরের জন্যও আমন্ত্রণ জানান তিনি। এ বার বাংলাদেশ সফরে গিয়ে সে দেশের বিদেশসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পাক বিদেশসচিব আমনা।