Advertisement
E-Paper

পালিয়ে বিয়ে, যুগলকে নৃশংস খুন পরিবারের

১৫ বছরের বাখতাজার হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আঠারোর ঘানি রহমান। আর সেই ‘অপরাধেই’ মিলল ভয়াবহ মৃত্যুর শাস্তি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সেই রাতে যেন মৃত্যুর শব্দ শুনতে পাচ্ছিল বছর আঠারোর ছেলেটা। বাবা খেতে ডেকেছিলেন শেষবারের মতো, একসঙ্গে। ছেলে যায়নি। বরং চুপচাপ নিজের ঘরে ফিরে এসেছিল। বোন দেখা করতে এসেছিল। শেষ স্মৃতি হিসেবে সে ছোট্ট বোনের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল লজেন্স।

সে জানত তার সঙ্গে কী ঘটতে চলেছে। পাশের বাড়ির যে বান্ধবীর সঙ্গে সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল, মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই যে তারও একই পরিণতি হয়েছে।

খাওয়া শেষ করে বাবা এবং এক কাকা ঘরে আসেন। একটি দড়ির বিছানায় শুইয়ে ছেলেটির একটি হাত ও পা খাটের পায়ার সঙ্গে খোলা ইলেকট্রিকের তার দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। এর পর শুধুই ভয়াবহ যন্ত্রণা... মৃত্যু পর্যন্ত পৌঁছতে মেয়েটি নিয়েছিল ১০ মিনিট। ছেলেটি আরও দীর্ঘ সময়। শেষমেশ এগিয়ে এলেন কাকা। শ্বাসরোধ করে খুন করলেন নিজের পরিবারের ছেলেটিকেই।

১৫ বছরের বাখতাজার হাত ধরে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল আঠারোর ঘানি রহমান। আর সেই ‘অপরাধেই’ মিলল ভয়াবহ মৃত্যুর শাস্তি। ঘটনাস্থল ফের পাকিস্তান। এ বার করাচি।

সম্মান রক্ষার নামে খুন এখানে নতুন ঘটনা নয়। হিসেব বলছে, পাকিস্তানে অধিকাংশ মেয়েদের খুনের পিছনেই হাত থাকে তাঁদের পরিবারের। পাক মানবাধিকার কমিশন জানাচ্ছে, গত কয়েক দশকের হিসেবে সম্মান রক্ষার নামে এখানে প্রতি বছর গড়ে অন্তত ৬৫০ জনকে খুন করা হয়। ক’দিন আগেই একই কারণে খুন হতে হয়েছিল পাক মডেল কান্দিল বালুচকে। বিষয়টি নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি।

তবে করাচির এই ঘটনার বীভৎসতায় বিস্মিত গোটা পাকিস্তান। আইন, প্রশাসন সবই রয়েছে, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফাঁক গলে বেঁচে যায় অপরাধীরা। ক’মাস আগে পাকিস্তানে পাশ হয়েছে সম্মান রক্ষার নামে খুন বিরোধী বিলও। তবে পরিস্থিতি যে বদলায়নি তার প্রমাণ ঘানি-বাখতাজারাই।

করাচির আলি ব্রোহি গথ। এখানেই ছোট থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছে ঘানি ও বাখতাজা। এলাকায় ভাল ছেলে বলেই পরিচিতি ছিল ঘানির। দু’দুটি চাকরিও করত সে। বাখতাজাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের কাছে বারবার অনুমতি চেয়েছিল ঘানি। শেষমেশ উপায় না দেখে কিছু টাকা আর গয়না নিয়ে বাড়ি থেকে পলিয়ে যায় দু’জনেই।

হায়দরাবাদে গিয়ে বিয়ে করে তারা। কিন্তু এর পরে বাখতাজার বাবা ফোন করে জানান, তাদের বিয়েতে আপত্তি নেই দুই পরিবারেরই। দুই বাবার মধ্যে তাদের বিয়ে নিয়ে চুক্তিও হয়েছিল। কিন্তু এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় তাঁদের সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি ফাঁস করে দেন। আর সেই চাপের মুখেই ছেলেমেয়েকে বলি দিতে রাজি হয়ে যায় দুই পরিবার।

খুনের পর স্থানীয় কবরখানায় পাশাপাশি কবর দেওয়া হয়েছে ঘানি ও বাখতাজাকে। প্রতিবেশীদের দাবি, খুনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন বাখতাজার বাড়ির অন্যান্যরা। গ্রেফতার করা হয়েছে ঘানি ও বাখতাজার বাবাকে।

Murder Pakistan পাকিস্তান Karachi করাচি Honour Killing electrocuted
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy