ইঙ্গিত ছিলই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হটাতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগে শেষমেশ কিছুতেই রাজি করানো গেল না বিদায়ী আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে। এ দিকে ট্রাম্পও অনড়। ক্যাপিটল-তাণ্ডব নিয়ে ক্ষমা চাওয়া দূরে থাক, ওই ঘটনার ছ’দিন পরে প্রথম বার প্রকাশ্যে এসে ট্রাম্প হুমকির সুরেই বললেন, তাঁকে ইমপিচ করার চেষ্টা হলে আরও বড় হাঙ্গামা হবে দেশে।
ডেমোক্র্যাটরা তবু ইমপিচ-অস্ত্র প্রয়োগে নাছোড়। তাঁদের কাছে এটাই এখন কার্যত শেষ অস্ত্র। প্রস্তাব ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে হাউসে। আজ, বুধবার আমেরিকার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে সভা শুরু হয়। প্রারম্ভিক বক্তৃতার মাধ্যমে ট্রাম্পকে ইমপিচ করা উচিত কি না, সেই বিতর্ক শুরু করেন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। বিতর্কের পরে আজই ভোটাভুটি হওয়ার কথা। সব ঠিক থাকলে পরে তা নিয়ে সেনেটে শুনানি হবে। সেখানে আবার ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের আধিপত্য। ১৯ তারিখের আগে সেনেট বসার কথাও নয়। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়ে হোয়াইট হাউসে আসছেন জো বাইডেন। তাই এক দিনে আদৌ ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
কিন্তু এমন একটা টালমাটাল অবস্থাতেও ট্রাম্পের হুমকি এবং তাঁকে লাগাতার সঙ্গত দিয়ে যাওয়া পেন্সের মনোভাবই চিন্তা বাড়াচ্ছে। বাইডেনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে দেশের সব প্রদেশের রাজধানীতে যে ট্রাম্প-সমর্থকেরা সশস্ত্র তাণ্ডব চালাতে পারে, গত কালই তা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে এফবিআই। ওয়াশিংটনে হাজার পনেরো বাড়তি সেনা মোতায়েন করা হবে বলেও সূত্রের খবর। ট্রাম্প নিজেই রাজধানী শহরে ২৪ তারিখ পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারির অনুমতি দিয়েছেন। এর মধ্যে আবার নিজের মেয়াদের শেষ সরকারি বিদেশ সফর বাতিল করেছেন ট্রাম্পের বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। ব্রাসেলসে ন্যাটো-প্রধান এবং বেলজিয়ামের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা ছিল তাঁর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইডেনের শপথ ঘিরে ফের হাঙ্গামার আশঙ্কাতেই সফর বাতিল করলেন পম্পেয়ো। যদিও বিদেশ দফতর বলছে, এই সিদ্ধান্ত বাইডেনের হাতে সুষ্ঠু ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বার্থেই! শুধু পম্পেয়ো নয়, দফতরের আরও বেশ কয়েক জন কর্তার সফরও বাতিল করা হয়েছে।