Advertisement
E-Paper

‘ইমরানের বক্তৃতায় ছাপ খুনে নীতির’, পাকিস্তানকে কড়া উত্তর ভারতের

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্যের (রাইট টু রিপ্লাই) জবাবে এ ভাবেই সরব হল ভারত।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪২
ছবি: এএফপি।

ছবি: এএফপি।

ভারতীয় নাগরিকদের হয়ে অন্য কারও কথা বলার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় প্রতিনিধি। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বিঁধে ভারতীয় কূটনীতিক বিদিশা মৈত্র বলেন, ‘‘বিশেষত ঘৃণার দর্শনে বলীয়ান হয়ে সন্ত্রাসের কারখানা চালাচ্ছে— এমন কারও ভারতীয়দের হয়ে কথা বলার কোনও অধিকারই নেই। পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় খুনে নীতির পরিচয় পাওয়া গিয়েছে।’’

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বক্তব্যের (রাইট টু রিপ্লাই) জবাবে এ ভাবেই সরব হল ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি বিদিশা মৈত্র সন্ত্রাস প্রশ্নে নিশানা করলেন ইমরানকে। তাঁর কথায়, ‘‘বক্তৃতায় পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেওয়াটা রাষ্ট্রনেতা-সুলভ নয়। এমন বক্তব্য খুনে নীতিরই পরিচায়ক।’’

গত কাল নির্ধারিত সময় ছাড়িয়ে ৫০ মিনিট লাগাতার ভারতকে আক্রমণ করে গিয়েছেন ইমরান। অন্য কোনও বিষয় উল্লেখ না করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ, কাশ্মীরিদের হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার প্ররোচনা, পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন। তাঁর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরে দ্রুত স্থির করে নেওয়া হয়, সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। বক্তৃতার কৌশল রচনায় প্রধান ভূমিকা নেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি মহম্মদ আকবরউদ্দিন। নবাগতা ফার্স্ট সেক্রেটারির সঙ্গে তাঁরা আলোচনা সেরে নেন।

বিদিশা বলেছেন. “পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে ভাবে সন্ত্রাসবাদকে মান্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তা এক দিকে যেমন নির্লজ্জ, অন্য দিকে তেমনই আগুন লাগানোর চেষ্টা। ওই দেশ তাদের সমস্ত মূল্যবোধকে বিসর্জন দিয়ে একচেটিয়া ভাবে সন্ত্রাসবাদের কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে।” এখানেই না থেমে বিদিশা বলে যান, “রাষ্ট্রপুঞ্জের এই পরম মর্যাদাপূর্ণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা প্রত্যেকটি কথার ঐতিহাসিক গুরুত্ব থাকবে, এটাই ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছ থেকে আমরা যা শুনলাম তা বিশ্বকে দু’ভাগে ভেঙে দেওয়ার এক দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রয়াস ছাড়া কিছু নয়। আমরা বনাম তোমরা, ধনী বনাম গরিব, দক্ষিণ বনাম উত্তর, উন্নত এবং

উন্নয়নশীল, মুসলমান এবং অন্যরা। এমনই একটি চিত্রনাট্য তিনি তুলে ধরলেন, যা বিভাজনের রাজনীতিতে কলুষিত করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জকে। এই বিভাজনের উদ্দেশ্য সংঘর্ষ তৈরি করা। এক কথায়, এটি ঘৃণা ছড়ানোর বক্তৃতা।”

শুধু ভারতই নয়, ইমরান খানের বক্তৃতার পরে বাইরের কাফেটেরিয়ার আড্ডায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বলতে শোনা গিয়েছে একটি নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণের কথা। তা হল, সাম্প্রতিক ইতিহাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বক্তৃতায় শুধুমাত্র একটি দেশকে আক্রমণ করে এমন বক্তৃতা শোনা যায়নি। পাশাপাশি এ কথাও বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারে তাঁর পূর্বসূরিদেরও ছাপিয়ে গিয়েছেন পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

বিদিশার বক্তব্য, “কূটনীতিতে শব্দের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোষ্ঠীসংহার, রক্তস্নান, উঁচু জাত, বন্দুক হাতে তুলে নেওয়া, শেষ দেখার লড়াই — এ সব শব্দে মধ্যযুগীয় মানসিকতারই প্রতিফলন হয়। এগুলি একুশ শতকের দর্শন নয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই শব্দগুলি সক্রিয় গণতন্ত্রের ভাষা নয়। আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি ঝাপসা ইতিহাসবোধটা একটু ঝালিয়ে নিন। ভুলে যাবেন না ১৯৭১ সালে নিজের দেশবাসীর ভয়াবহ গণহত্যার পিছনে ছিলেন পাক সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে নিয়াজি। আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় সে কথা স্মরণ করেছেন।”

Imran Khan Vidisha Maitra UNGA India Pakistan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy