Advertisement
E-Paper

পশ্চিমী দুনিয়ার তোষণে ভারত নষ্ট, আত্মতৃপ্ত দেশ: তীব্র বিষোদ্গার চিনের

প্রথমে ছিল যৌথ উচ্ছ্বাস। কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার তৃপ্তি। সেই উচ্ছ্বাস, তৃপ্তি এ বার বদলে যাচ্ছে হতাশায়। যে অস্ত্রে ভারতকে ঘায়েল করা হয়ছে, সেই অস্ত্র এ বার ব্যুমেরাং হয়ে ফিরতে চলেছে চিনের দিকেই। বিষয়টি স্পষ্ট হতেই অস্বস্তিতে বেজিং।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৬ ১৯:১৫

প্রথমে ছিল যৌথ উচ্ছ্বাস। কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার তৃপ্তি। সেই উচ্ছ্বাস, তৃপ্তি এ বার বদলে যাচ্ছে হতাশায়। যে অস্ত্রে ভারতকে ঘায়েল করা হয়ছে, সেই অস্ত্র এ বার ব্যুমেরাং হয়ে ফিরতে চলেছে চিনের দিকেই। বিষয়টি স্পষ্ট হতেই অস্বস্তিতে বেজিং। ফলে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে এখন তীব্র শ্লেষ ভারতের প্রতি। ভারতকে ‘আত্মতৃপ্ত’ এবং ‘নষ্ট’ দেশ হিসেবে গালিগালাজ করা হল চিনা কাগজ গ্লোবাল টাইমসে।

ভারতকে পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী বা এনএসজি-র সদস্য হতে দেয়নি চিন। অধিকাংশ সদস্য দেশ রাজি থাকলেও, চিনের তীব্র আপত্তিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকে যায়। এতে শুধু চিন নয়, পাকিস্তানও যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। ভারতের এনএসজি-ভুক্তি আটকাতে চিনের দ্বারস্থ হয়েছিল পাকিস্তান। আর পাকিস্তানকে হাতিয়ার বানিয়ে ভারতকে রুখেছে চিন। পাকিস্তানকে দিয়ে তড়িঘড়ি এনএসজি সদস্যপদ পাওয়ার আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। সেই আবেদন তুলে ধরে চিন এনএসজি বৈঠকে দাবি করে, এনপিটি সই না করা সত্ত্বেও ভারত যদি এনএসজিতে ঢুকতে পারে, তা হলে পাকিস্তানকেও এনএসজিতে ঠাঁই দিতে হবে। ভারতের আবেদন শেষ পর্যন্ত খারিজ হয়ে যায়নি। কিন্তু, চিনের বাধায় ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকে গিয়েছে। এতে ইসলামাবাদেও উচ্ছ্বাস প্রবল। পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ পাকিস্তানের সংসদে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, পাকিস্তান সাফল্যের সঙ্গে এনএসজিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি আটকে দিয়েছে।

চিন-পাকিস্তানের এই যৌথ প্রয়াস যে কয়েক দিনের মধ্যেই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরেছে। গোটা বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রশস্ত্র এবং অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তির বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে যে সংস্থা, সেই এমটিসিআর-এর পূর্ণাঙ্গ সদস্য হয়েছে ভারত। এই সংস্থার সদস্য হওয়ার চেষ্টা চিন বহু দিন ধরেই করছিল। কিন্তু চিনের সে আবেদন ইতিমধ্যেই এক বার খারিজ হয়েছে। এ বার ভারত এমটিসিআর-এর সদস্য হয়ে যাওয়ায় ওই সংগঠনে চিনের অন্তর্ভুক্তি আরও কঠিন হল। চিন যত দিন এনএসজিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করবে, ভারতও তত দিন এমটিসিআর-এ চিনকে ঢুকতে দেবে না। এমন জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।

পাকিস্তানের সরকার বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু চিনের হতাশা গোপন থাকেন। চিনের কমিউনিস্ট পার্টি তথা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে কঠোর ভাষায় ভারতের সমালোচনা করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘‘সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমী দুনিয়া ভারতকে প্রচুর থাম্বস্‌ আপ দিচ্ছে, কিন্তু চিনের জন্য থাম্বস্‌ ডাউন। ভারতকে তারা নষ্ট করে দিয়েছে। যদিও ওই দক্ষিণ এশীয় দেশটির জিডিপি চিনের জিডিপির মাত্র ২০ শতাংশ, তবু পশ্চিমীদের চোখে ভারত সোনার টুকরো ছেলে।’’ কূটনীতিকরা বলছেন, এই সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে স্পষ্ট, এমটিসিআর-এ ভারতের অন্তর্ভুক্তি হওয়ায় চিন প্রবল হতাশ। ভারতের এনএসজি-ভুক্তি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এমটিসিআর-এ নিজেদের প্রবেশের কোনও আশা যে আর রইল না, তা বেজিং ভালই বুঝতে পারছে। তাই কমিউনিস্ট পার্টি তথা সরকার নিয়ন্ত্রিত কাগজের সম্পাদকীয়তে ভারত সম্পর্কে এত কঠোর ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে। চিনা খবরের কাগজে আরও লেখা হয়েছে, ‘‘আন্তর্জাতিক মহল ভারতকে যে ভাবে তোষণ করে, তাতে নিজেদের বিদেশনীতি নিয়ে ভারত একটু বেশিই আত্মতৃপ্ত হয়ে পড়েছে।’’

আরও পড়ুন: এনএসজিতে ভারতের বিরোধিতায় কোন দেশগুলি? দেখে নিন

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা কিন্তু চিনের এই প্রতিক্রিয়ায় কিছুটা আশ্চর্য। ভারতের সঙ্গে পশ্চিমী দুনিয়ার সুসম্পর্ক নিয়ে চিনের উদ্বেগ থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু চিনা কাগজে যে ভাষায় ভারতের সমালোচনা করা হয়েছে, এই মুহূর্তে সত্যিই তার কোনও প্রাসঙ্গিকতা নেই বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। চিনের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এই মুহূর্তে খুব মধুর নয় ঠিকই। কিন্তু ভারত এমটিসিআর-এর সদস্য হয়ে যাওয়ার পরই চিনা সংবাদমাধ্যম যে ভাবে ভারতের তীব্র নিন্দা করল, তা হতাশারই প্রতিফলন। বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা।

China Global Times Criticism Against India Spoilt Smug
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy