ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামানোর জন্য নাকি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ফোন করেছিলেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই! এ বার এমনটাই দাবি করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের উপর ৩৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ‘জুজু’ দেখিয়েই নাকি সে যাত্রার মতো ক্ষান্ত করা গিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানকে!
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফের দাবি করেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার নিরসন করেছিলেন তিনিই। দুই দেশের উপর চড়া শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তার পরেই নাকি তাঁকে ফোন করেছিলেন মোদী। আশ্বাস দিয়ে ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন, ভারত যুদ্ধে যাবে না। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘মোদী আমাকে বলেন, ‘আমারা এই কাজ করব না।’ আমি বললাম, ‘কোন কাজের কথা বলছেন?’ মোদী উত্তর দেন, ‘আমরা যুদ্ধে যাব না।’’’
ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে যে তাঁর নেপথ্য ভূমিকা ছিল, এ পর্যন্ত বহু বার এই দাবি করে ফেলেছেন ট্রাম্প। তবে মোদী তাঁকে ফোন করেছিলেন, এ কথা এই প্রথম বার শোনা গেল ট্রাম্পের মুখে। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি যে কোনও বিরোধের ভাল ভাবে নিষ্পত্তি করতে পারি। আমি বরাবরই এমন ছিলাম। এর আগেও আমি বছরের পর বছর ধরে এই কাজ করেছি। বিভিন্ন যুদ্ধের কথাই যদি বলি... এই যেমন ভারত, পাকিস্তান— ওরা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে যাচ্ছিল।’’
আরও পড়ুন:
মার্কিন-সৌদি বিনিয়োগ ফোরামে সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের উপস্থিতিতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এ কথা বলেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশকেই বলেছিলাম, আমি তোমাদের একে অপরের উপর পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে নামতে দেব না। এতে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে। লস অ্যাঞ্জেলেসের উপর পারমাণবিক ধুলো ভাসবে। তার পরেও তোমরা চাইলে এটা করতে পারো, কিন্তু আমি দুই দেশের উপরেই ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। আমেরিকার সঙ্গে আর বাণিজ্য করতে পারবে না।’’ এর পরেই নাকি রণে ভঙ্গ দেয় ভারত ও পাকিস্তান।
এ ভাবে ‘শুল্ক-জুজু’ দেখিয়ে আরও চারটি যুদ্ধ থামিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প। সব মিলিয়ে সারা বিশ্বে থামিয়েছেন আটটি যুদ্ধ। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, সংঘর্ষবিরতির পরেই নাকি তাঁকে ফোন করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তিনি।
যদিও শুরু থেকেই এ সব দাবি অস্বীকার করে এসেছে ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব থামানো নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি উড়িয়ে দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্পের বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে হুমকি যুদ্ধবিরতিকে প্রভাবিত করেছে, এই দাবিও মানতে নারাজ নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, এক দিন আগে ওভাল অফিসে সৌদির যুবরাজের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময়েও একই দাবি করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘এই ওভাল অফিসে আমরা অনেক ভাল কাজ করেছি। আমি আটটি যুদ্ধ থামিয়েছি। তবে পুতিনের সঙ্গে আরও একটি যুদ্ধ বাকি আছে।’’ তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের একই কথা শোনা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখে।