পাকিস্তানের পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখছেন ইমরান খান। ছবি: এএফপি।
প্রত্যাঘাতের সামর্থ তাঁদের রয়েছে, কিন্তু আঞ্চলিক স্বার্থে শান্তির কথা মাথায় রেখে সংযত রয়েছেন বলে দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে আজ তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়।’’ পুলওয়ামা-কাণ্ডের পর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনার জন্য ইমরান ভারতকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। ইসলামাবাদ যে শান্তি আলোচনার দরজা সব সময় খুলে রেখেছে, তা বোঝাতে চেষ্টায় ত্রুটি রাখেননি পাক প্রধানমন্ত্রী।
পরে পাকিস্তানের এক মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সে দেশের জিও নিউজ জানিয়েছে, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইমরান বলেছেন, পুলওয়ামার ঘটনায় তদন্তের প্রস্তাব ভারতকে তিনি দিয়েছিলেন। প্রস্তাব দিয়েছেন সন্ত্রাস-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনারও। সূত্রের খবর, গত কাল রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করার চেষ্টাও করেছিলেন ইমরান।
পার্লামেন্টের বক্তৃতায় ইমরান ঘোষণা করেন, পাকিস্তানের কব্জায় থাকা ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আগামিকাল মুক্তি দেওয়া হবে। এর পরই ভারতকে কার্যত তুলোধোনা করা শুরু করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘সেই ঘটনার আধ ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের দোষারোপ করা শুরু হল। ওদের বলেছিলাম, প্রমাণ দিন।’’ তাঁর অভিযোগ, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ লঙ্ঘন করেছে। পুলওয়ামার-কাণ্ডের ‘ডসিয়ার’ চেয়েছিল পাকিস্তান। ভারত দিয়েছে বালাকোটে হামলার দু’দিন পরে।
বালাকোটে ভারতের বায়ুসেনার আক্রমণের পর দিন নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভারতের আকাশে প্রবেশ করেছিল পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। পার্লামেন্টে সে বিষয়ে যুক্তি খাড়া করেছেন ইমরান। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের কোনও ক্ষতি করা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। আমরাও যে ওই দেশে ঢুকতে পারি, সেটা দেখাতে চেয়েছিলাম। দায়িত্বশীল ভাবেই আমরা সে কাজ করতে পেরেছি।’’ কার্যত হুঁশিয়ারির সুরেই পাক প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ভারত ‘আগ্রাসী’ মনোভাব দেখালে পাকিস্তানও প্রত্যাঘাত করতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, ‘‘অনেক দেশ ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। ভারত কোনও পদক্ষেপ করলে, আমাদেরও প্রত্যাঘাত করতে হবে। উত্তেজনা প্রশমনের যে চেষ্টা করছি, তাকে দুর্বলতা ভাববেন না।’’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে কোনও পরিস্থিতির যোগ্য জবাব দিতে পাক সেনাবাহিনী সক্ষম। ভারতের সংবাদমাধ্যমকেও একহাত নিয়ে ইমরান বলেন, ‘‘ভারতের মিডিয়া যুদ্ধের উন্মাদনা তৈরি করেছিল। কিন্তু আমাদের সংবাদমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।’’
ইমরানের অভিযোগ, কোনও সদর্থক কাজে ভারতের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান হয়। আমরা করতারপুর করিডরের ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়া সত্ত্বেও ভারতের কাছ থেকে কোনও উত্তর পেলাম না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy