E-Paper

এগিয়ে আসছে নির্বাচন, ঢাকার উদ্বেগ নিয়ে মোদীর সফরে বাংলাদেশকে বার্তা দিতে চায় ভারত

নয়াদিল্লি আমেরিকাকে বলতে চায়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্ব যথেষ্ট। সেখানে এখন এমন কিছু করা বাঞ্ছনীয় নয়, যাতে সে দেশে মৌলবাদী, কট্টরপন্থী, সন্ত্রাসবাদীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যায়।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২৩ ০৮:৫৬
narendra Modi

নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সে দেশের উপরে আমেরিকার ক্রমবর্ধমান চাপ নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার নয়াদিল্লির কাছে ঘরোয়া ভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের অভিযোগ, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের যথেষ্ট উদ্যোগ এবং চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমেরিকা এবং আংশিক ভাবে জাপানের পক্ষ থেকে যে ভাবে অতিসক্রিয়তা দেখানো হচ্ছে, তা যথেষ্ট অস্বস্তির। শীর্ষ কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কথা বলার পক্ষপাতী সাউথ ব্লক। প্রকাশ্যে যদিও বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অন্য কোনও রাষ্ট্রের ভোট নিয়ে শেষ কথা বলবেন সে দেশের মানুষ। তাতে নাক গলানোর প্রশ্ন নেই। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রের খবর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের দফতর থেকে ঢাকাকে জানানো হয়েছে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের গুরুত্বের দিকটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন ওয়াশিংটন সফরে তুলে ধরা হবে। গত মাসে জাপানের হিরোশিমায় জি-৭ শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রিত রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গিয়েছিলেন মোদী। তখনই বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তোলার পরিকল্পনা ছিল সাউথ ব্লকের। কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারণে তখন তা সম্ভব হয়নি।

নয়াদিল্লি আমেরিকাকে বলতে চায়, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের গুরুত্ব যথেষ্ট। সেখানে এখন এমন কিছু করা বাঞ্ছনীয় নয়, যাতে সে দেশে মৌলবাদী, কট্টরপন্থী, সন্ত্রাসবাদীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যায়। সম্প্রতি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ঘিরে হাসিনা সরকার ১৫ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে। সেখানে ভারতের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওই অঞ্চলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উদার, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথাই বলা হয়েছে। সূত্রের মতে, নয়াদিল্লি এ কথাও ওয়াশিংটনকে বলতে চায় যে, সে দেশে এমন কিছু করা উচিত হবে না, যাতে আওয়ামী লীগ সরকার চিনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

এই মুহূর্তে আমেরিকার নতুন ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশ সরগরম। শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে বাইডেন প্রশাসন। বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ করার লক্ষ্যে এই নয়া ভিসা নীতি। নির্বাচনকে যাঁরা বানচাল করার চেষ্টা করবেন, তাঁরা আমেরিকায় প্রবেশাধিকার পাবেন না।

অনেকেই মনে করছেন, আমেরিকার প্রশাসন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজের দেশের আইন প্রয়োগ করে সে দেশের জন্য পৃথক ভিসা নীতি গ্রহণ করল। এই পদক্ষেপের আসল বক্তব্য হল, হাসিনার সময়ে হওয়া নির্বাচনগুলি অবাধ ছিল না। আওয়ামী লীগের বক্তব্য, এর ফলে ভোটের আগে বাংলাদেশে বিরোধীরা আমেরিকার এই ঘোষণাকে অস্ত্র করার বাড়তি সুযোগ পেয়ে গেল। বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলি বহু দিন ধরেই দাবি করছে, হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে অবাধ নির্বাচন সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোট হোক। সূত্রের খবর, এই দাবির প্রতি আমেরিকার পূর্ণ সমর্থন আছে।

বাংলাদেশের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের নাগরিকেরা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও ভোটাধিকারের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের রায় কেড়ে নিয়ে কোনও সরকারের ক্ষমতায় থাকার নজির নেই। সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সভা-সমাবেশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়’।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh Election Narendra Modi usa

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy