যুদ্ধ মানে কি শুধুই শক্তি প্রদর্শন?
আমেরিকার সেনা এত দিন সে রকমই ভাবত।
কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে ‘ক্লাস’ নেওয়ার পর বদলে গিয়েছে তাদের সেই ধারণা। ওয়াশিংটনের বিশেষ সংরক্ষিত এলাকা জয়েন্ট বেস লিউইস ম্যাকর্ডে দাঁড়িয়ে মার্কিন বাহিনীর পদস্থ আধিকারিক টেডি ক্লেইসনার বলছিলেন, “ভারতীয়দের কাছ থেকে আমরা যা যা শিখলাম, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আধুনিক যুদ্ধের সেরা মন্ত্র— সর্বাধিক সংযম, সর্বনিম্ন বলপ্রয়োগ।”
ক্লেইসনার মার্কিন সেনার ২৩ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের ব্যাটেলিয়ন ৪-এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। তবু, তাঁর মানতে দ্বিধা নেই, ‘যুদ্ধ অভ্যাস-২০১৫’তে অংশ নিতে না পারলে তাঁর সামরিক অভিজ্ঞতার ভাঁড়ার অনেকটাই খালি থেকে যেত।
ওয়াশিংটনের জয়েন্ট বেস লিউইস ম্যাকর্ডে এখন চলছে ভারত-মার্কিন যৌথ সামরিক মহড়া। ২০০৪ সালে শুরু হয়েছিল এই বাৎসরিক কর্মসূচি। কোনও বছর ভারতে, কোনও বছর আমেরিকায় এই মহড়ার আয়োজন হয়। তারই নাম ‘যুদ্ধ অভ্যাস-২০১৫’। মহড়ায় অংশ নেওয়া ভারতীয় বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গুলজিৎ সিংহ জামওয়াল। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ১৫০ জন আধিকারিক ও জওয়ান। মহড়ায় অংশ নেওয়া মার্কিন বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছেন টেডি ক্লেইসনার। তিনি জানালেন, সীমান্ত পেরিয়ে আসা জঙ্গিদের মোকাবিলা ভারতীয় বাহিনী কী ভাবে করে, আমরা এ বারের মহড়ায় মূলত সেটাই শেখার চেষ্টা করছি। অনুপ্রবেশ রুখতে ভারত কী ধরনের নিরাপত্তা বেড়াজাল তৈরি করে, তা-ও শিখছি। ক্লেইসনারের কথায়, “ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশ্বের অন্যতম সেরা বাহিনী। জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে এই বাহিনী সীমান্তের কাছে এমন ভাবে অবস্থান নেয় যে অনুপ্রবেশের যে কোনও চেষ্টা দ্রুত সফল করা জঙ্গিদের পক্ষে বেশ কঠিন। তাই ভারতীয় বাহিনীর আধিকারিকরা সঠিক রণকৌশল নির্ধারণের জন্য বেশ খানিকটা সময় পেয়ে যান।” বাহিনীর আর এক আধিকারিক জানালেন, পাহাড়ি এলাকায় কী ভাবে যুদ্ধ করতে হয়, সে বিষয়েও ভারতীয় বাহিনীর কাছে অনেক কিছু শেখার আছে।