Advertisement
E-Paper

হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরল পুলিশ, কোমায় চলে গেলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত, অস্ট্রেলিয়ায় ফিরল ফ্লয়েড-হত্যার স্মৃতি

চার বছর পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এ বার অস্ট্রেলিয়ায়। ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গৌরব কুন্ডিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে এক পুলিশ অফিসার তাঁর গলা হাঁটু দিয়ে ঠেসে ধরেন রাস্তায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫ ১৩:৫৯
(বাঁ দিকে) অস্ট্রেলিয়ায় কোমায় আচ্ছন্ন ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গৌরব। (ডান দিকে) ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডকে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরার দৃশ্য।

(বাঁ দিকে) অস্ট্রেলিয়ায় কোমায় আচ্ছন্ন ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গৌরব। (ডান দিকে) ২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডকে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতি ফিরল অস্ট্রেলিয়ায়। হাঁটু দিয়ে মাটিতে চেপে ধরা এক যুবকের গলা। তিনি পরিত্রাহি চিৎকার করে বলছেন, ‘‘আমি কোনও ভুল করিনি।’’ কিন্তু তার পরেও পুলিশ অফিসারের হাঁটুর চাপ যেন আরও বাড়ছিল। রাস্তায় হাঁটু দিয়ে ঠেসে ধরে তাঁকে হাতকড়া পরাচ্ছিলেন ওই পুলিশ অফিসার। ছটফট করছিলেন যুবক। পুলিশের হাঁটুর চাপে শেষমেশ তাঁর মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে হাসপাতালে ভর্তি যুবক। অস্ট্রেলিয়ার এই ঘটনাই স্মৃতি উস্কে দিয়েছে ২০২০ সালে আমেরিকার মিনেসোটার কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনার।

চার বছর পর সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত যুবক গৌরব কুন্ডিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে এক পুলিশ অফিসার তাঁর গলা হাঁটু দিয়ে ঠেসে ধরেন রাস্তায়। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি অ্যাডিলেডের ঘটনা। সেখানে ইস্টার্ন সাবার্বে থাকেন গৌরব এবং তাঁর স্ত্রী অমৃতপাল কউর। অস্ট্রেলিয়া টুডে-র প্রতিবেদন বলছে, গৌরব এবং তাঁর স্ত্রী অ্যাডিলেডের রাস্তায় বৃহস্পতিবার ঝগড়া করছিলেন। সেই সময় পুলিশের একটি টহলরত গাড়ি সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশের কর্তারা ঘটনাটিকে গার্হস্থ্য হিংসা হিসাবেই ভেবেছিলেন। তারা ভেবেছিল স্ত্রীর উপর অত্যাচার করছিলেন গৌরব। তার পরই তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য প্রস্তুতি নেয় পুলিশ। তখন তাঁর স্ত্রী অমৃতপাল জানান, এটি কোনও গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা নয়, গৌরব মদ্যপান করেছেন। তাই চিৎকার করে কথা বলেছেন। তার বেশি কিছু নয়। কিন্তু তার পরেও তাঁকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করে পুলিশ, এমনই দাবি করেছেন অমৃতপাল। তবে নাইন নিউজ-এর কাছে পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেফতারি এড়াতে গৌরব প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তার পরই জ্ঞান হারান।

যদিও অশান্তির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গৌরবের স্ত্রী অমৃতপাল। তাঁর অভিযোগ, গ্রেফতারের আগে রাস্তায় গৌরবের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেন এক পুলিশ অফিসার। এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন তিনি। গৌরবও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করতে থাকেন। তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমি কোনও অন্যায় করিনি।’’ কিছু ক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারান গৌরব। অমৃতপাল জানান, তিনি পুলিশকর্মীদের কাছে বার বার আর্জি জানান গৌরবকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁরা ছাড়েননি বলে দাবি অমৃতপালের। তাঁর আরও অভিযোগ, গৌরবের মাথা পুলিশের গাড়িতে জোরে জোরে ঠুকে দেওয়া হয়। যে ঘটনার ভিডিয়ো তিনি করতে পারেননি। তাঁর স্বামীর অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন অমৃতপাল। গৌরবের অবস্থার অবনতি হতে থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাঁকে। সংবাদমাধ্যমকে অমৃতপাল বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গৌরবের মস্তিষ্ক পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমায় চলে গিয়েছে ও।’’

এই ঘটনাই ২০২০ সালের জর্জ ফ্লয়েডের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। পাঁচ বছর আগে পুলিশের হাঁটুর চাপে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড। তাঁর মৃত্যুর সেই ভয়াবহ ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল ফ্লয়েড বার বার বলছেন, ‘‘শ্বাস নিতে পারছি না, আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’’ ফ্লয়েডের গলা হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিলেন ডেরেক শভিন নামের এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। সেই হাঁটুর চাপে ফ্লয়েডের কণ্ঠস্বর আস্তে আস্তে থেমে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। তার পরবর্তী পর্যায়ে শুরু হয় ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলন। শভিন এখন জেলে।

Indian Origin Australia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy