Advertisement
E-Paper

নাছোড় বর্ণবৈষম্য, ক্ষোভ ভারতীয় ছাত্রীর

ছাত্র নির্বাচনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়েই সহপাঠীরা বলেছিলেন, তাঁর হার নিশ্চিত। কারণ, তিনি সংখ্যালঘু। গায়ের রং বাদামি। তার উপর আবার তাঁর সঙ্গী পদপ্রার্থীও মহিলা সংখ্যালঘু। নিদেনপক্ষে একজন সাদা চামড়ার পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে ভোটের ময়দানে নামলেও জেতার একটা আশা ছিল!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৩০
রিনি সম্পত। ছবি: ফেসবুক।

রিনি সম্পত। ছবি: ফেসবুক।

ছাত্র নির্বাচনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়েই সহপাঠীরা বলেছিলেন, তাঁর হার নিশ্চিত। কারণ, তিনি সংখ্যালঘু। গায়ের রং বাদামি। তার উপর আবার তাঁর সঙ্গী পদপ্রার্থীও মহিলা সংখ্যালঘু। নিদেনপক্ষে একজন সাদা চামড়ার পুরুষ সঙ্গীকে নিয়ে ভোটের ময়দানে নামলেও জেতার একটা আশা ছিল!

ভোটে অবশ্য জিতে গিয়েছেন বছর একুশের রিনি সম্পত। সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পড়ুয়া রিনি এখন স্টুডেন্ট বডি প্রেসিডেন্ট। তবে তাতে চারপাশের পরিবেশ পাল্টায়নি। রিনি বলছেন, বন্ধুদের এমন সব উপদেশ তাঁর কাছে নতুন নয়। ছ’বছর বয়সে আমেরিকায় আসা। আর তার পর থেকেই কটূক্তি, উপেক্ষা আর বৈষম্য তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। রিনি জানালেন, অ্যারিজোনায় থাকার সময়ে এক সহপাঠী তাঁকে প্রশ্ন করেছিল, ‘‘তোমার মা কি মঙ্গলগ্রহ থেকে এসেছে?’’ ক্লাসরুম থেকে খেলার মাঠ— তাচ্ছিল্য গা সওয়াই হয়ে গিয়েছিল। রিনির কথায়, ‘‘শরণার্থী বলে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ছিল। ইংরেজি ভাষাটা শেখার চেষ্টা করছিলাম। নিজের গায়ের রঙের সঙ্গেও চলছিল লড়াই।’’

লড়াই যে এখনও সমান ভাবেই চলছে, তা রিনির কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে গত শনিবার রাতে। এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরার সময়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে রিনিকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ করতে থাকেন। হাতের গ্লাস থেকে পানীয়ও ঢেলে দেন তাঁর গায়ে। ভুল বুঝতে পেরে পরে অবশ্য ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। জানান, অন্য এক ভারতীয়ের সঙ্গে রিনিকে গুলিয়ে ফেলেছিলেন তিনি! স্তম্ভিত রিনি বাড়ি ফিরেই পুরো ঘটনা লেখেন ফেসবুকে। প্রশ্ন তোলেন, গায়ের রঙের তফাত দেখে এমন মন্তব্য, এমন মনোভাব আর কত দিন বরদাস্ত করা সম্ভব? রিনি লিখেছেন, ‘‘শনিবারের ঘটনা সব স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। ভাঙা রেকর্ডের মতো পুরনো সব কটূক্তি কানের মধ্যে বাজতে শুরু করেছে।’’

শনিবারের ঘটনা ‘শেয়ার’ করে শিরোনামে উঠে এসেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই ছাত্রী। আমেরিকার একটি দৈনিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিশদ জানিয়েছেন কী কী ভাবে বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। ক্যাম্পাসে আরও যাঁরা বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাঁদেরও নিজেদের অভিজ্ঞতা বলার আর্জি জানিয়েছেন রিনি।

রিনির ঘটনায় শোরগোল পড়ে যাওয়ার পরে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সহমর্মিতা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন সহপাঠী-বন্ধুরাও। রিনির পাশে দাঁড়িয়েছেন ইউএসজি-র (আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট গভর্নমেন্ট) ডিন অব রিলিজিয়াস লাইফ বরুণ সোনিও।

রিনি অবশ্য বলছেন, ‘‘বর্ণবৈষম্য বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে। ক্ষমা চাইলে হৃদয়ের ক্ষতে প্রলেপ পড়ে না। কারও অস্তিত্বকে গালি দেওয়া যে খারাপ, আশা করছি আমরা সেটা শিখতে চেষ্টা করব। তবেই ক্ষতে প্রলেপ পড়বে।’’

indian origin tamil student racism victim us college american college apartheid america apartheid rini sampat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy