Advertisement
E-Paper

পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে জল্পনার মাঝেই পুরোদমে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইরানের, উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি এখনও মনে করেন ‘অদূর ভবিষ্যতে’ ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি হতে পারে আমেরিকার। অন্য দিকে, আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি হলেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ২০:৫৮
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মাসুদ পেজ়েসকিয়ান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মাসুদ পেজ়েসকিয়ান। — ফাইল চিত্র।

চুক্তির জল্পনা সত্ত্বেও পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য ইউরেনিয়ামের মজুত উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করছে ইরান। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র একটি গোপন রিপোর্টে। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত ১৭ মে পর্যন্ত দেশটি প্রায় ৪০৮.৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মজুত করা ইউরেনিয়ামের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ (১৩৩.৮ কেজি) বেশি।

উল্লেখ্য, তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে জল্পনার মাঝেই এই খবরটি প্রকাশ্যে এসেছে। এ বিষয়ে আইএইএ-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি উদ্বেগের সঙ্গে জানিয়েছেন, পারমাণবিক শক্তিবিহীন রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সাম্প্রতিক অতীতে একমাত্র ইরানই এই স্তরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পরিসংখ্যানের জন্য তেহরানকে সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানিয়েছেন রাফায়েল।

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি এখনও মনে করেন ‘অদূর ভবিষ্যতে’ ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি হতে পারে আমেরিকার। অন্য দিকে, আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি হলেও ইরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। পশ্চিম এশিয়ার দেশ ওমানের মধ্যস্থতায় ইটালির রাজধানী রোমে পঞ্চম দফার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর গত সোমবার এই বার্তা দিয়েছে তেহরান। এ বিষয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েসকিয়ান বলেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সপ্তাহান্তের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। তবে ইরান প্রয়োজনে চুক্তি না করেই আলোচনার টেবিল থেকে উঠে আসতে প্রস্তুত।’’ মাসুদ আরও বলেন, ‘‘যদি তারা (আমেরিকা) আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বা নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা হলে এমন নয় যে আমরা না খেয়ে মারা যাব। আমরা ঠিকই টিকে থাকার পথ খুঁজে নেব।’’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা বন্ধ রাখলে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানান, এই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি, উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ২০১৮ সালে তাঁর নির্দেশেই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা। কিন্তু ২০২৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ একটি রিপোর্টে জানায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া। কিন্তু পাঁচ দফা আলোচনার পরেও এখনও ট্রাম্পের শর্ত মেনে পরমাণু চুক্তি করতে রাজি হয়নি ইরান।

US Iran Nuclear deal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy