আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে ষষ্ঠ দফার পরমাণু বৈঠক ভেস্তেই গেল। শনিবার তেহরান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল, সংঘাতের আবহে আলোচনায় বসা যায় না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আলোচনা ‘অর্থহীন’ বলেও দাবি করেছে ইরান। সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য আমেরিকাকে দায়ী করেছে তারা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে ইরানের আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা তানসিমের একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। ইরানের ওই সংবাদ সংস্থা সে দেশের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাইকে উদ্ধৃত করেছে। প্রতিবেদনে ইরানের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, “এক পক্ষ (আমেরিকা) এমন আচরণ করছে যে, আলোচনা অর্থহীন হয়ে পড়েছে। আপনি একই সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসতে চান, আবার ইজ়রায়েলকে ইরানের ভূখণ্ডে আক্রমণ করার সুযোগ করে দিতে চান। দুটো একসঙ্গে হতে পারে না।”
শুক্রবার তেহরানে ইজ়রায়েলের হামলার পরেই ইরান আমেরিকার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। দাবি করেছিল যে, হামলা চালানোর ক্ষেত্রে ইজ়রায়েলকে সমর্থন করছে আমেরিকা। আমেরিকা অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।
ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতের আবহে আমেরিকা এবং ইরানের মধ্যে পরমাণু বৈঠক আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিলই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য প্রথমে জানিয়েছিলেন, তিনি আশাবাদী। কিন্তু ইরান ওই বৈঠকে আর যোগ দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। পরে অবশ্য ট্রাম্প ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আমি হামলা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কূটনীতি এবং আলোচনার জন্য ইরানকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। তেহরানকে আমি ৬০ দিনের চূড়ান্ত সময় দিয়েছিলাম। আজ ৬১তম দিন।’’
আরও পড়ুন:
রবিবার ওমানে পরমাণু বৈঠকে বসার কথা ছিল আমেরিকা এবং ইরানের। আমেরিকা চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। কিন্তু আমেরিকা চায় এখানেই থেমে যাক ইরান।
বুধবারই আমেরিকার উপর চাপ বাড়িয়ে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে বলেন, ‘‘পরমাণু চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনা ব্যর্থ হলে এবং সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে ইরান আঞ্চলিক (পশ্চিম এশিয়ার) মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালাবে।’’ ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যদি আমাদের উপর সংঘাতের দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়, মনে রাখবেন, এই অঞ্চলের সমস্ত মার্কিন সেনাঘাঁটি কিন্তু আমাদের নাগালে রয়েছে।’’ বুধবারই একটি প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প ইরানের নাম না-করেই বলেছিলেন, “ওদের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকতে পারে না। খুব সহজ বিষয় এটি। আমরা এটা হতে দেব না।”