ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাতের পর প্রথম প্রকাশ্যে এলেন আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। বহু দিন পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁর অনুগামীদের। শনিবার তেহরানের একটি প্রেক্ষাগৃহে শিয়াপন্থী ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের একটি বার্ষিক অনুষ্ঠানে চেনা পোশাক এবং চেনা মেজাজে দেখা যায় খামেনেইকে। সেই ছবি সম্প্রচারিতও হয় ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি খামেনেইকে। তবে একাধিক বার আগে থেকে রেকর্ড করা বার্তায় আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলকে তোপ দেগেছেন তিনি। ১২ দিনের যুদ্ধ থামার পরেও দীর্ঘ সময় ধরে খামেনেইকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় রয়েছেন, কী ভাবে রয়েছেন, তা নিয়ে একাধিক জল্পনা ছড়ায় ইরানে। তবে খামেনেই ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা যায়, সম্ভাব্য হামলা থেকে রক্ষা পেতে গোপন স্থানে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলেন অশীতিপর এই ধর্মীয় নেতা। গোপন আস্তানার অবস্থান ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামও ব্যবহার করছিলেন না তিনি।
আরও পড়ুন:
শনিবার অবশ্য কোনও বিবৃতি বা ভাষণ দেননি খামেনেই। ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যমের তরফে প্রকাশিত ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, তাঁকে দেখেই মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলে স্লোগান দিচ্ছেন কয়েক জন। কয়েক জন আবার একনাগাড়ে একটি স্লোগান আওড়ে যাচ্ছেন। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, “আমাদের রক্তে বইছে নেতা (খামেনেই)-র আদর্শ।
বস্তুত, খামেনেইয়ের নির্দেশ ছাড়া ইরানে ধর্মীয় বা প্রশাসনিক, কোনও কাজই হয় না। সামরিক বিষয়েও তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তবে তাঁর শাসনে ইরানে মৌলিক অধিকার, নারীদের স্বাধীনতার পরিসর ক্রমশ সঙ্কুচিত হচ্ছে বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠনগুলির। ইজ়রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ অবশ্য ইরানে নতুন করে জাতীয়তাবাদ এবং দেশপ্রেমের ঢেউ তুলেছে। খামেনেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামা বহু মানুষ বহির্শত্রু ইজ়রায়েলকে রুখতে ইরান সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি বুঝেই হয়তো শনিবার ইরানের এক প্রবীণ ধর্মগুরুকে সে দেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘ও ইরান’ গাওয়ার অনুরোধ করেন খামেনেই। তাতে গলা মেলান অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে।