Advertisement
E-Paper

তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ ৫ বছরের মেয়ের, রোদে দাঁড় করিয়ে মারা হল আইএস শিবিরে

ইরাকের মসুলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস)-এর শিবিরে এই ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪-য়। শিশুটির উপর নির্যাতন চালিয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী এক জার্মান মহিলা। জেনিফার ডব্লিউ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:০৩
আইএস শিবিরে ক্রীতদাসীরা। ইরাকের মসুলে। -ফাইল ছবি।

আইএস শিবিরে ক্রীতদাসীরা। ইরাকের মসুলে। -ফাইল ছবি।

গা পুড়ে যাওয়া জ্বরে অবসন্ন হয়ে পড়েছিল ৫ বছরের মেয়েটি। তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল তার। কাঁদতে কাঁদতে জল চেয়েছিল। সেই জল দেওয়া তো দূরের কথা, অসুস্থ হয়ে পড়ার অপরাধে মেয়েটিকে শিকল দিয়ে বেঁধে ঠা ঠা রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল দীর্ঘ ক্ষণ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল মেয়েটি।

ইরাকের মসুলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস)-এর শিবিরে এই ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪-য়। শিশুটির উপর নির্যাতন চালিয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী এক জার্মান মহিলা। জেনিফার ডব্লিউ। মসুলে আইএসের মহিলা শাখার সক্রিয় সদস্য। যে শিশুটির উপর ওই নির্যাতন চালানো হয়েছিল, তাকে বাড়ির ‘দাসী’ হিসেবে কিনেছিলেন জেনিফারের স্বামী। মসুল ও অন্যত্র আইএসের শিবিরগুলিতে শিশু ও মহিলাদের উপর কী অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়, এই ঘটনা তার আরও একটি দৃষ্টান্ত।

জার্মানির শহর মিউনিখের সন্ত্রাসবাদ দমন আদালতে যুদ্ধাপরাধ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জেনিফারের বিরুদ্ধে। গত ১৪ ডিসেম্বর। সেই অভিযোগে জানানো হয়েছে, ৫ বছর বয়সী মেয়েটি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল যে, বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলেছিল। কিন্তু তার পরেও তাকে রেহাই দেওয়া হয়নি। জেনিফার তাঁর স্বামীকে দিয়ে মেয়েটির হাতে, পায়ে শিকল পরিয়েছিলেন। তার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মাঠে। সেখানে ঠা ঠা রোদে মেয়েটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। জেনিফার মেয়েটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। মামলার নিষ্পত্তি হলে জেনিফারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে, পুলিশ সূত্রের খবর।

মিউনিখের পুলিশ জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে জার্মানি ছেড়েছিলেন জেনিফার। তার পর তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে জেনিফার ঢুকেছিলেন ইরাকে। পরের মাসেই আইএসের সক্রিয় সদস্য হয়েছিলেন। জেনিফারকে আইএসের স্বঘোষিত নীতি পুলিশে নিয়োগ করা হয়েছিল। আইএসের দখলে থাকা ফাল্লুজা ও মসুল শহরের পার্কগুলির উপর নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেনিফারকে।

আরও পড়ুন- দিল্লিতে ভিআইপি খুনের ছক! ১৭ জায়গায় হানা, দুই ছাত্র-সহ ধৃত ১০​

আরও পড়ুন- আইএস মাথাচাড়া দিচ্ছে ভারতে! দিল্লি- উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক তল্লশি এনআইএ-র​

আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘‘মহিলাদের ব্যবহার আর পোশাক কেমন হবে, আইএসের সেই বেঁধে দেওয়া কোড মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপর নজর রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেনিফারকে। পার্কগুলিতে টহল দেওয়ার সময় সঙ্গে কালাশনিকভ রাইফেল, পিস্তল রাখতেন জেনিফার। পরে থাকতেন বিস্ফোরক লাগানো জ্যাকেট।’’

শিশু নির্যাতনের ঘটনার কয়েক মাসের মধ্যেই, ২০১৬-য় আঙ্কারায় গিয়েছিলেন জেনিফার। সেখানকার জার্মান দূতাবাসে গিয়ে তাঁর পরিচয় সংক্রান্ত নথিপত্রে কিছু রদবদলের আর্জি নিয়ে। জার্মান দূতাবাস থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই জেনিফারকে গ্রেফতার করে তুরস্কের পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁকে তুলে দেওয়া হয় জার্মানির হাতে। পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে জেনিফারের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা সেই সময় নিতে পারেনি জার্মানির পুলিশ। লোয়ার স্যাক্সনিতে তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল জেনিফারকে।

মিউনিখের পুলিশ জানাচ্ছে, জেনিফার ওই সময় খুব ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন আইএসের দখলে থাকা কোনও এলাকায় ফিরে যেতে। সেই চেষ্টায় এ বছরের জুনে সিরিয়ায় ঢোকার সময় জার্মানির পুলিশ গ্রেফতার করে জেনিফারকে।

ISIS German Woman Jennifer W আইএস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy