Advertisement
E-Paper

ইজ়রায়েল চাইছে ‘আব্রাহাম জোট’ সক্রিয় করতে, পশ্চিম এশিয়ায় ইরানও ছড়িয়ে রেখেছে প্রচুর ‘ছদ্ম প্রতিনিধি’

ইজ়রায়েলি হানায় সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে হামাস শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়ার। এর পরই পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের আবহ তৈরি হলে, তা কেবল দুই দেশের মধ্যে সীমিত থাকার সম্ভাবনা কম।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ১৪:২০
Israel is planning to make Abraham Alliance active while Iran has several proxy scattered in different countries dgtl

ইসরায়েল ও ইরানের বর্তমান পরিস্থিতি ঘিরে উত্তেজনা পশ্চিম এশিয়ায়। ছবি: সংগৃহীত।

হামাস গোষ্ঠীর শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইরান। তার পর থেকেই পশ্চিম এশিয়ার কূটনৈতিক গতিবিধির দিকে নজর গোটা বিশ্বের। সম্ভব্য হামলার আশঙ্কায় ইজ়রায়েলের তরফে অবিরাম যোগাযোগ রাখা হচ্ছে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সঙ্গে। আমেরিকা ইতিমধ্যেই আরও সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে আবারও চর্চা শুরু হয়েছে ‘আব্রাহাম জোট’ নিয়ে।

‘আব্রাহাম জোট’ শব্দটি সাম্প্রতিক কালে প্রথম শোনা গিয়েছিল ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মুখে। আমেরিকার কংগ্রেসে বক্তব্য রাখার সময় পশ্চিম এশিয়ায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য ‘আব্রাহাম জোট’-এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন তিনি। এই শব্দটি এসেছে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের ‘আব্রাহাম চুক্তি’ থেকে। ইজ়রায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, বাহরিন, মরক্কো ও সুদানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে স্থিতাবস্থা আনতে এই চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির মধ্যস্থতায় ছিল আমেরিকা।

নেতানিয়াহু চাইছেন পশ্চিম এশিয়ায় ইজ়রায়েলের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সঙ্গীদের নিয়ে একটি জোট তৈরি করতে। ইরানের দিক থেকে যদি কোনও হামলা হয়, তার প্রত্যুত্তর দেওয়ার জন্যই আরও বেশি করে এই জোটকে ফলপ্রসূ করতে চাইছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্ট ইতিমধ্যেই আমেরিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হেলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ইরান যে হুমকি দিয়েছে, যদি সেই মতো ইজ়রায়েলকে সত্যি সত্যিই আক্রমণ করে বসে, তা হলে পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশে ইরানের মদতপুষ্ট সামরিক গোষ্ঠী ছড়িয়ে রয়েছে। ১৯৭৯ সাল থেকেই পশ্চিম এশিয়ায় এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। লেবানন, গাজ়া, সিরিয়া, ইয়েমেন-সহ একাধিক দেশে এমন বেশ কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে, যারা বকলমে ইরানের হয়েই কাজ চালাচ্ছে।

যেমন লেবাননে হেজবুল্লা গোষ্ঠী। ইরানের সমর্থন নিয়েই আশির দশকে তৈরি হয়েছিল এই সংগঠন। পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের প্রথম উল্লেখযোগ্য ‘ছদ্ম প্রতিনিধি’ ছিল এই হেজবুল্লা গোষ্ঠীই। কূটনৈতিক মহলে চর্চা, এদের অর্থবল ও অস্ত্রবল উভয়ই জোগান দেয় ইরানের সামরিক বাহিনী। লেবাননে ইজ়রায়েলকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যেই গঠিত হলেও, হেজবুল্লা বর্তমানে পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর সামরিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী।

শুধু লেবাননেই নয়, গাজ়াতেও এমন ‘ছদ্ম প্রতিনিধি’ ছড়িয়ে রেখেছে ইরান। দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে)-এর সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ রয়েছে ইরানের। শোনা যায়, ইরান থেকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তাও পায় তারা। এই দুই গোষ্ঠীর সঙ্গেই ইজ়রায়লের দ্বন্দ্ব চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। সম্প্রতি হামাসের শীর্ষনেতার মৃত্যুর পর ইজ়রায়েলকে প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ গোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের মসৃণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সময় থেকেই ইরানের সঙ্গে সিরিয়ার এই গোষ্ঠীর ‘সখ্য’। আসাদ গোষ্ঠীর সামরিক বাহিনীকেও বিভিন্ন সময়ে মদত দিয়েছে ইরান। একই রকম ভাবে ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন রয়েছে ইরানের। ইরাকেও একাধিক এমন গোষ্ঠীকে মদত দিয়ে যাচ্ছে ইরান। ২০০৩ সালে ইরাকে আমেরিকা সেনা পাঠানোর পর থেকেই ইরান ‘বন্ধুত্ব’ করতে শুরু করেছিল এই গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে।

অর্থাৎ, ইজ়রায়েলি হানায় হামাস শীর্ষনেতার মৃত্যুর পর ইরান যে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, তা যদি সত্যি সত্যিই ঘটিয়ে বসে, সে ক্ষেত্রে পশ্চিম এশিয়ায় ইরানের বন্ধু রয়েছে অনেক। ইজ়রায়েলও তাই নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে।

Iran Israel Conflict israel Iran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy