Advertisement
E-Paper

বেঁচে থাকার চেয়ে কখনও মরে যাওয়াই ভাল! ইজ়রায়েলি হানায় নয় শিশুকে হারিয়ে স্বজনদের হাহাকার গাজ়ায়

দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কাজ করেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আলা। ঘটনার সময় হাসপাতালেই ইজ়রায়েলি হানায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করছিলেন তিনি। হঠাৎ বাড়িতে হামলার খবর পান। ৯ সন্তানের দেহ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যের কী পরিহাস! আধপোড়া দেহাংশগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল নাসের হাসপাতালেই।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজ়ার চিত্র।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজ়ার চিত্র। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১০:৪২
Share
Save

গাজ়ায় সাধারণের কোনও নিরাপত্তা নেই, মানুষের জীবনেরও কোনও দাম নেই। এর চেয়ে মারা যাওয়াও ভাল! দীর্ঘশ্বাস ফেলে এমনটাই বলছেন গাজ়ায় নয় সন্তান হারানো চিকিৎসক আলা-আল-নাজ্জারের স্বজনেরা। ইজ়রায়েলি বিমান হামলায় একসঙ্গে ৯ সন্তানকে হারিয়েছেন আলা। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তাঁর স্বামী হামদি আল-নাজ্জার এবং ১০ বছর বয়সি পুত্র আদম— হামদি এবং আলার একমাত্র জীবিত সন্তান। বিমানহানা থেকে কোনওমতে বেঁচে গেলেও এখনও জ্ঞান ফেরেনি তাঁদের।

দক্ষিণ গাজ়ার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কাজ করেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আলা। ঘটনার সময়েও হাসপাতালেই ইজ়রায়েলি হানায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করছিলেন তিনি। হঠাৎ নিজের বাড়িতে বিমান হামলার খবর পান। ৯ সন্তানের দেহ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যের কী পরিহাস! আধপোড়া দেহাংশগুলি নিয়ে আসা হয়েছিল নাসের হাসপাতালেই।

আলার দেওর আলি আল-নাজ্জার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘কোনও পরিবহণ ব্যবস্থা ছাড়াই নাসের হাসপাতাল থেকে খান ইউনিসের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিল আলা, কিন্তু গিয়ে সন্তানদের ছিন্নভিন্ন দেহ দেখতে পান। এই দৃশ্য কোনও পিতামাতার কাছে দুঃস্বপ্ন। পোড়া দেহগুলি দেখে উনি চিৎকার করছিলেন।’’ আর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ৯ সন্তানের দেহই এত পুড়ে গিয়েছিল যে, চেনার উপায় ছিল না। যখন মেয়ে নিবালের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে তোলা হচ্ছিল, তখন চিৎকার করে মেয়ের নাম ধরে ডাকছিলেন আলা। এখনও ঘটনার আকস্মিকতা কাটেনি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের। মানসিক ভাবেও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি।

শুক্রবার বিকেলের বিমান হামলাটি কোনও রকম সতর্কতা ছাড়াই চালানো হয়েছিল। ঘটনা সম্পর্কে ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, তাদের সৈন্যঘাঁটির কাছে একটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে কাজ করা বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজনকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালানো হয়েছিল, তবে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। অথচ ওই দিনের হামলায় যাদের প্রাণ গিয়েছে, সকলেই সাধারণ এলাকাবাসী। আলার বোন সাহার আল-নাজ্জার কান্নাভেজা গলায় বলে চলেন, ‘‘আমি কাফনের ঢাকা শিশুদের এক জনকেও চিনতে পারিনি। ওদের চেহারা আর দেখা যাচ্ছিল না।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, আলার স্বামী হামদির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। জর্ডনের ফিল্ড হাসপাতালে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। তাঁর ডান ফুসফুসের একাংশ বাদ দিতে হয়েছে। আদমের একটি হাত কেটে বাদ দিতে হয়েছে। শরীর পুড়ে গিয়েছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। আলি বলেন, ‘‘চোখের সামনে আমার ভাইয়ের বাড়িটিকে ভাঙা বিস্কুটের মতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে দেখলাম, নীচে চাপা পড়েছিল আমার প্রিয়জনেরা।’’ উদ্ধারকারীদের সঙ্গে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে একে একে দাদার ৯ সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করেছিলেন আলি। সে কথা মনে পড়লেও শিউরে উঠছেন তিনি। আলির কথায়, ‘‘আমি জানি না জ্ঞান ফিরলে দাদাকে কী বলব! বলব, দু’টি কবরে ওর ন’জন সন্তানকে দাফন করেছি?’’ একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে আলি বলেন, ‘‘গাজ়ায় আর কোনও নিরাপদ স্থান নেই। এই নির্যাতনের চেয়ে মৃত্যুই ভাল।’’

gaza Gaza Strip Israel Palestine Conflict palestine

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।