গাজ়া ভূখণ্ডের রাফায় একটি ত্রাণশিবিরের কাছে গুলি চালানোর কথা স্বীকার করে নিল ইজ়রায়েলি সেনা! মঙ্গলবার সকালে ইজ়রায়েলি সেনা জানিয়েছে, গাজ়ায় একটি ত্রাণশিবির থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে কয়েক জনকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে তারা। তবে ত্রাণশিবিরে যাওয়ার জন্য কোনও গাজ়াবাসীকে বাধা দেওয়া হয়নি বলে দাবি ইজ়রায়েলের। তাদের বক্তব্য, ওই গাজ়াবাসীরা এমন ভাবে ইজ়রায়েলি বাহিনীর দিকে এগিয়ে আসছিল, যা দেখে ‘হুমকিমূলক’ বলে মনে হয়েছিল। সেই কারণেই গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি ইজ়রায়েলি সেনার।
গত কয়েক দিন ধরেই ইজ়রায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে ত্রাণশিবিরমুখী জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠে এসেছে। মঙ্গলবারও ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলেছেন গাজ়া প্রশাসনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, একটি ত্রাণশিবিরের কাছে ইজ়রায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২৭ জন প্যালেস্টাইনি নিহত হয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও অনেকে। যদিও ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, ত্রাণশিবিরে যাওয়ার নির্দিষ্ট পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরে এগোতে শুরু করেছিলেন কয়েক জন। সেই কারণেই গুলি চালানো হয়েছে।
গাজ়া ভূখণ্ডে ত্রাণশিবিরের কাছাকাছি গুলি চলার একের পর এক অভিযোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রপুঞ্জও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই গুলি চলার ঘটনাগুলির নিরপেক্ষ তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স অনুসারে, মঙ্গলবার সকালেই গাজ়ার উত্তরপ্রান্তে ইজ়রায়েলি সেনার তিন জওয়ানের মৃত্যুর খবর মেলে। যদিও ওই তথ্য যাচাই করেনি রয়টার্স। ঘটনাচক্রে, ওই খবর ছড়ানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই রাফা শহরে ত্রাণশিবিরের কাছে গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আল কাশিম ব্রিগেড ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালানোর পরে নেতানিয়াহুর ফৌজ ধারাবাহিক ভাবে গাজ়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এর পর কাতারের মধ্যস্থতায় এবং আমেরিকা ও মিশরের প্রচেষ্টায় গত ১৫ জানুয়ারি রাতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল ইজ়রায়েল সরকার এবং হামাস। ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরও হয়েছিল। কিন্তু পণবন্দি মুক্তি ঘিরে টানাপড়েনের জেরে মার্চের গোড়ায় একতরফা ভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজ়ায় আবার হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। তার পর থেকে প্রায় প্রতি দিনই গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলা চলছে।