ব্যক্তিগত ভাবে যুদ্ধের জন্য প্রত্যেককেই মূল্য চোকাতে হচ্ছে। তাঁর পরিবার কোনও ব্যতিক্রম নয়। এই যুদ্ধের জন্য দু’বার বিয়ে পিছিয়েছে তাঁর ছেলে অ্যাভনের নেতানিয়াহুর। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, অ্যাভনেরও এক জন নায়ক। কারণ, বিয়ে পিছিয়ে যাওয়ার দুঃখও দেশের জন্য সয়ে নিয়েছে সে। আর এই সমস্ত কথা নেতানিয়াহু বলেছেন কয়েক ঘণ্টা আগে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে বিপর্যস্ত হয়ে যাওয়া বে’এরশেবার সোরোকা হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে। আর ঘরে-বাইরে এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।
এই যুদ্ধে এ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে ইজ়রায়েলের ২৪ জন ও ইরানের অন্তত ২৬৩ জনের। অন্য দিকে, গাজ়াতেও ইজ়রায়েলি হামলা অব্যাহত। শুক্রবার ত্রাণের গাড়ির জন্য অপেক্ষারত ২৫ জন প্যালেস্টাইনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। শীঘ্রই সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রপুঞ্জের। আজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে লন্ডনে নাৎসি জার্মানির অভিযান ‘দ্য ব্লিৎজ়’-এর সঙ্গে ইরানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের তুলনা টানেন নেতানিয়াহু। ব্রিটেনে সেই হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ৪৩ হাজার সাধারণ মানুষের।
নেতানিয়াহুর ছোট ছেলে অ্যাভনের। বয়স ৩০ বছর। প্রথমে তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল গত নভেম্বরে। নিরাপত্তার কারণে তা পিছিয়ে যায়। গত সোমবার সেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তা পিছিয়ে যাওয়ার পিছনে বিরোধীদের বিক্ষোভের আশঙ্কাও একটি কারণ হতে বলে জল্পনা চলছে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, “অ্যাভনের এই নিয়ে দ্বিতীয় বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকির কথা চিন্তা করে নিজের বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছে। ওর বাগদত্তাও এর মাসুল ব্যক্তিগত ভাবে দিচ্ছে। আর আমার প্রিয়তমা স্ত্রী তো বীরাঙ্গনা। এই যুদ্ধের জন্য ব্যক্তিগত মূল্য তিনিও চুকিয়ে চলেছেন।” ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে প্যালেস্টাইনের হামাসের হাতে বন্দি ইজ়রায়েলের নাগরিক অ্যানাৎ অ্যাংগ্রেস্টের ছেলে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে এক্স হ্যান্ডলে তাঁর কটাক্ষ, “এই আত্মত্যাগ আমার পরিবারেরও নজর এড়ায়নি।” বিরোধী নেতৃত্বও নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যকে ‘সীমাহীন আত্মপ্রশংসা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)