E-Paper

বসনিয়ায় ‘স্নাইপার সাফারি’-র তদন্ত শুরু ইটালি সরকারের

নব্বইয়ে দশকের শুরুতে ইউগোস্লাভিয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বসনিয়া। সেই থেকে শুরু সে দেশের রক্তাক্ত ইতিহাসের অধ্যায়। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে বসনিয়ার রাজধানী সারাজেভো দখল করে রেখেছিল সার্বিয়ার সেনা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:২০

—প্রতীকী চিত্র।

সেটাও ছিল এক ধরনের ‘সাফারি’। নাম ছিল ‘স্নাইপার সাফারি’। তবে জিপে চড়ে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে বন্যপ্রাণী দেখা নয়, সেই ‘সাফারি’-র উদ্দেশ্য ছিল রাস্তায় চলাফেরা করা সাধারণ মানুষকে গোপন কোনও স্থান থেকে বন্দুকের নিশানায় স্রেফ মেরে ফেলা। আর তার জন্য নাকি বিত্তশালী ইটালিয়ানদের একাংশ এক লপ্তে কয়েক লক্ষ পাউন্ড খরচ করতেও পিছপা হতেন না। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় বসনিয়া ও হারজ়েগোভিনার রাজধানী সারাজেভোতে এমন ভাবেই নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের খুনের প্রচলন শুরু হয়েছিল। এজ়িও গাভাজ়েনি নামে এক লেখক তথা সাংবাদিকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি সেই হত্যালীলার তদন্ত শুরু করেছে ইটালি সরকার। মিলানের সরকারি আইনজীবীরা এ নিয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করেছেন। ব্রিটেনের এক প্রথম সারির দৈনিক এ খবর জানিয়েছে।

নব্বইয়ে দশকের শুরুতে ইউগোস্লাভিয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বসনিয়া। সেই থেকে শুরু সে দেশের রক্তাক্ত ইতিহাসের অধ্যায়। ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে বসনিয়ার রাজধানী সারাজেভো দখল করে রেখেছিল সার্বিয়ার সেনা। সেই সময়েই সেখানকার সাধারণ নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা চলেছিল র‌াডোভান করাজ়িক নামে এক সার্ব নেতার নেতৃত্বে। স্নাইপারদের মাধ্যমে পথচলতি সাধারণ মানুষকে খুন করার মতো বিষয় তখন ছিল খুবই ‘স্বাভাবিক’। আর সেই হত্যালীলায় অংশ নিতেই নাকি ইটালি, আমেরিকা এবং রাশিয়ার মতো দেশ থেকে পর্যটকেরা যেতেন সারাজেভোতে। এক এক জন নাগরিককে খুন করতে ৮০ হাজার পাউন্ড দিতেও রাজি ছিলেন সেই সব পর্যটক। নিশানায় শিশু এবং উর্দিধারীরা থাকলে দর আরও বাড়ত। খরচ পৌঁছত এক লক্ষ পাউন্ডেও। ২০১৬ সালে গণহত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন র‌াডোভান। ওই চার বছরের সময়-কালে অন্তত ১১ হাজার বসনিয়ানের মৃত্যু হয়েছিল বলেজানা যায়।

সাংবাদিক গাভাজ়েনি প্রথমে নব্বইয়ের দশকেই ইটালির একটি সংবাদপত্র থেকে এই ‘স্নাইপার সাফারি’-র বিষয়টি জেনেছিলেন। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তখন আইনি পথে হাঁটতে পারেননি তিনি। পরে, ২০২২ সালে ‘সারাজেভো সাফারি’ নামে একটি তথ্যচিত্র দেখেন ওই সাংবাদিক। মিরান জ়ুপানিক নামে স্লোভানিয়ার এক পরিচালকের তৈরি ওই তথ্যচিত্রে থাকা প্রমাণের ভিত্তিতেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে মিলানের প্রশাসনের হাতে ১৭ পাতার একটি ফাইল জমা দেন তিনি। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইটালির সরকার। আপাতত সেই সব ইটালির নাগরিকের সন্ধান চলছে, যাঁদের বিরুদ্ধে সারাজেভোতে গিয়ে নাগরিক হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bosnia Italy

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy