Advertisement
E-Paper

ইরানে জেলবন্দি মায়ের জন্য খালি রাখা হল চেয়ার, নোবেল শান্তি পুরস্কার নিতে গেল ছেলে-মেয়ে

কেবল নোবেল শান্তি পুরস্কার নেওয়াই নয়, জেলবন্দি মায়ের বার্তাও গোটা বিশ্বকে পড়ে শুনিয়েছে নাবালক দুই সন্তান। জানিয়েছে, আর কোনও দিন মায়ের সঙ্গে দেখা হবে কি না, জানে না তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৪
Jailed Iranian activist Narges Mohammadi’s children accept Nobel Peace Prize, chair kept empty for her

মায়ের হয়ে পুরস্কার নিচ্ছেন নার্গিস মহম্মদির দুই সন্তান। ছবি: রয়টার্স।

‘নারীদের উপর শোষণ এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াই’ করার জন্য ২০২৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন ইরানের জেলবন্দি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদি। কিন্তু তাঁকে নরওয়েতে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণের অনুমতি দেয়নি তেহরান প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে নোবেল বিজয়ীর যমজ সন্তান, সতেরো বছরের আলি এবং কিয়ানাই মায়ের হয়ে পুরস্কার নিল।

কেবল পুরস্কার নেওয়াই নয়, মায়ের বার্তাও গোটা বিশ্বকে পড়ে শুনিয়েছে দু’জন। লিখিত বার্তায় নিজের পরিচয় দিয়ে নার্গিস বলেন, “আমি পশ্চিম এশিয়ার এক নারী। আমি এমন একটা জায়গা থেকে এসেছি, যেখানে এক সময় সমৃদ্ধ সভ্যতা ছিল। কিন্তু এখন সেখানে শুধু যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার বাড়বাড়ন্ত।” ইরানের মৌলবাদী শাসনের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ইরানের মহিলা হিসাবে আমি গর্বিত, কারণ এখানকার সভ্যতা এবং সংস্কৃতিতে আমারও অবদান রয়েছে। কিন্তু এখন আমি ধর্মীয় শাসনের শোষণের কারণে অসহায় অবস্থায় রয়েছি।”

নার্গিসকে সম্মান জানাতে অনুষ্ঠানে একটি ফাঁকা চেয়ার রাখার সিদ্ধান্ত নেন নোবেল কমিটি। সেই চেয়ারে রাখা হয় নোবেলজয়ীর ছবি। নার্গিসকে নিয়ে মোট পাঁচ জন নোবেলজয়ী বন্দি অবস্থায় নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করলেন। এই তালিকায় রয়েছেন মায়ানমারের আউং আন সুকিও। তবে অনেকেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী লড়াইয়ের মুখ নেলসন ম্যান্ডেলার লড়াইয়ের সঙ্গে নার্গিসের লড়াইয়ের তুলনা টানছেন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি ছিলেন ম্যান্ডেলা। আর মোট ১৩ দফায় ৩১ বছর ধরে কারাগারেই রয়েছেন নার্গিস। ফ্রান্সে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকেন মহম্মদির দুই সন্তান এবং স্বামী। দুই সন্তানের দাবি, প্রায় ৯ বছর ধরে মাকে দেখেনি তারা। আর কোনও দিন দেখতে পাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে তাদের।

ইরানের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ডিফেন্ডার্স অফ হিউম্যান রাইটস সেন্টার’ দীর্ঘ দিন ধরেই ইরানে মানবাধিকার, মূলত নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। এই সংস্থার সহকারী প্রধান নার্গিস। এই সংস্থার প্রধান শিরিন ইবাদি ২০০৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। নোবেল কমিটির তরফে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, নার্গিসের লড়াইটা শুরু হয় নব্বইয়ের দশক থেকে। তখন তিনি ইরানের একটি কলেজে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করতেন। সেই সময়ই সে দেশে নারীদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে প্রথম সরব হন তিনি। রক্ষণশীল ইরানে মেয়েদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে গিয়ে মোট ১৩ বার জেলে যেতে হয়েছে তাঁকে। পাঁচ বার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তার পরেও অবশ্য ইরানে নারীদের অবস্থার বিশেষ হেরফের হয়নি। পশ্চিমি রাষ্ট্রগুলি এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকেছে তেহরান। আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে সে দেশের মেয়েদের প্রতি। তবু নার্গিসদের লড়াই চলেছে। সেই লড়াইকেই স্বীকৃতি দিলেন নোবেল কমিটি।

Nobel Peace Prize Nobel Iran Human Rights Jail
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy