জেমস ওয়াটসন
ডিএনএ ডাবল হেলিক্সের আকার বাতলে দিয়ে ১৯৬২ সালে বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিক ও মরিস উইলকিন্সের সঙ্গে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। এ ছাড়াও তাঁর ঝুলিতে ছিল একাধিক আন্তর্জাতিক সম্মান। কিন্তু যে গবেষণাগারে সারা জীবন কাটিয়েছেন ৯০ বছর বয়সি জেমস ওয়াটসন, তারাই বিজ্ঞানীর যাবতীয় সাম্মানিক পদ কেড়ে নিল একের পর এক জাতি-বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের জেরে।
জাতি-বিদ্বেষী কথা বলার জন্যই ২০০৭ সালে ‘কোল্ড স্প্রিং হার্বার ল্যাবরেটরি’-র কাজ হারিয়েছিলেন ওয়াটসন। কিন্তু সেখানে ‘চ্যান্সেলর এমিরেটাস’-সহ তিনটি সাম্মানিক পদ ছিল তাঁর। সেগুলি কেড়ে নেওয়া হয়নি। ২০০৭-এ একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আফ্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার আশা খুবই ক্ষীণ। সমাজ বলে বুদ্ধির ধারে ওঁরা আমাদের সমান। কিন্তু গবেষণায় তা ধরা পড়ে না।’’ এখানেই থামেননি। আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা এই কালো মানুষদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরা জানেন সত্যিটা কী।’’
সম্প্রতি একটি তথ্যচিত্রে ওয়াটসন ফের বলেন, তিনি এখনও নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। জিনের পার্থক্যের জন্যই সাদা ও কালো মানুষদের বুদ্ধ্যঙ্ক (আইকিউ)-এর এত তফাত। ওয়াটসনের এই মন্তব্যের পরে কোল্ড স্প্রিং হার্বার ল্যাবরেটরি জানায়, ‘‘খুব নিন্দনীয়, বেপরোয়া মন্তব্য। বিজ্ঞান ওঁকে সমর্থন করে না।’’ এর পরেই তারা ওয়াটসনের তিনটি সাম্মানিক পদ— ‘চ্যান্সেলর এমিরেটাস’, ‘অলিভার আর গ্রেস প্রোফেসর এমিরেটাস’ ও ‘সাম্মানিক ট্রাস্টি’ কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
কোল্ড স্প্রিং হার্বার ল্যাবরেটরির সঙ্গে ওয়াটসনের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৬৮ সালে ল্যাবের ডিরেক্টর হন। ১৯৯৪ সালে প্রেসিডেন্ট। তার পরে চ্যান্সেলর। তাঁর নামে একটি স্কুলও রয়েছে ল্যাবে। অক্টোবর মাসে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে শয্যাশায়ী ওয়াটসন। জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে। ওয়াটসনের ছেলে রুফাস আক্ষেপ করে বললেন, ‘‘যে ল্যাবে বাবা সারা জীবন কাটালেন, তাদের কাছেই বোঝা হয়ে গেলেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy