Advertisement
E-Paper

ফের উত্তপ্ত কেনিয়ার ভোট, হত ১

বৃহস্পতিবার ছিল ফের নির্বাচন। কিন্তু তাতেও বিরোধী-বিক্ষোভ ঠেকানো গেল না কেনিয়ায়। পুলিশ আর বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে কিসুমু শহরে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ বছরের এক যুবক।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৯
প্রতিবাদ: জ্বলছে নাইরোবির মাথারে জেলা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বয়কটের জন্য রাস্তায় নেমেছেন কেনিয়ার বিরোধী নেতা রালিয়া ওডিঙ্গার সমর্থকরা। ভোট দিতে ইচ্ছুক মানুষকে এ ভাবেই আটকেছেন তাঁরা। ছবি: এএফপি।

প্রতিবাদ: জ্বলছে নাইরোবির মাথারে জেলা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বয়কটের জন্য রাস্তায় নেমেছেন কেনিয়ার বিরোধী নেতা রালিয়া ওডিঙ্গার সমর্থকরা। ভোট দিতে ইচ্ছুক মানুষকে এ ভাবেই আটকেছেন তাঁরা। ছবি: এএফপি।

তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিরোধীদের অভিযোগে কেনিয়ার সুপ্রিম কোর্ট গত অগস্টের নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার ছিল ফের নির্বাচন। কিন্তু তাতেও বিরোধী-বিক্ষোভ ঠেকানো গেল না কেনিয়ায়। পুলিশ আর বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে কিসুমু শহরে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ বছরের এক যুবক।

তুমুল প্রতিবাদ-আপত্তির মধ্যেও ৮ অগস্টের ভোটে জিতেছিলেন প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াট্টা। প্রধান বিরোধী প্রার্থী রালিয়া ওডিঙ্গাকে হারিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওডিঙ্গা সুপ্রিম কোর্টে জানান, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গলদ ছিল। ভোটের ফলাফলে কারচুপির জোরেই জিতে গিয়েছিলেন কেনিয়াট্টা। সব শুনে সুপ্রিম কোর্ট পুনর্নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে। কিন্তু এ বারের ভোট বয়কটের ডাক দেন বিরোধী নেতা ওডিঙ্গা। তাঁর আশা ছিল, লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোট থেকে মুখ ফেরাবেন। বুধবার অর্থাৎ ভোটের আগের দিনও বিরোধীদের তরফে প্রাণপণ চেষ্টা চালানো হয় সে ব্যাপারে।

পশ্চিম আফ্রিকার এই অংশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে বাসিন্দাদের মনেও ভয় জাগছে। ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে এখানে ভয়ঙ্কর হিংসা ছড়িয়েছিল। প্রাণ গিয়েছিল অন্তত এক হাজার মানুষের। কেনিয়াট্টা অগস্টে জিতে যাওয়ার পর পরও বেশ কিছু এলাকায় পর পর সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে মারা গিয়েছেন অন্তত ২৪ জন। আর এ দিন বিরোধীরা নির্বাচন বয়কট করার জন্য পথে নামতেই পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ শুরু হয়। কিসুমু শহরেই চরম বিক্ষোভ হয়। সেখানে ১৯ বছরের জর্জ ওধিয়াম্বো নামে এক যুবকের পায়ে গুলি লাগে। হাসপাতাল সূত্রে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, পায়ে গুলি লাগলেও অত্যধিক রক্তক্ষরণের ফলে মারা যান ওই যুবক। আরও তিন বিক্ষোভকারীর প্রাণ গিয়েছে বলে দাবি করা হলেও সে বিষয়ে নিশ্চিত খবর মেলেনি। মোম্বাসায় এক ব্যক্তি ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। তার উপরে ছুরি নিয়ে চড়াও হয় বিক্ষোভকারীরা। গুরুতর জখম হয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: লিঙ্গবৈষম্যের নালিশ উবেরের বিরুদ্ধে

কিসুমুতে ভোটের সরঞ্জাম এসে পৌঁছলেও কিছু কিছু বুথে নির্বাচনী অফিসাররা পৌঁছতেই পারেননি। বিরোধীদের ঘাঁটি কিবেরা বস্তি এলাকায় পুলিশের দিকে পাথর ছুড়েছে জনতা। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। জনতাকে বিক্ষিপ্ত করতে শূন্যেও গুলি চলেছে। প্রতিবাদীদের মুখে ছিল স্লোগান, ‘‘এখানে ভোট চলবে না। আমাদের ছেড়ে দিন!’’

কেনিয়াট্টার এলাকা কিয়াম্বুতে অবশ্য পরিবেশ শান্তিপূর্ণই ছিল। বৃহস্পতিবার গন্ডগোল হতে পারে আঁচ করে কেনিয়াট্টা শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে এক টিভি বিবৃতিতে বলেন, ‘‘ভোট দিয়ে বাড়ি চলে যাবেন। প্রতিবেশীর পাশে থাকুন। তাঁরা আপনার ভাই-বোন। আর যাঁরা ভোট দিতে চান না, তাঁদেরও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার রয়েছে।’’

কেনিয়ায় অন্তত ৪০টি উপজাতি গোষ্ঠী রয়েছে। জাতীয়তাবোধের চেয়ে আঞ্চলিক পরিচয় তাই এখানে অনেক সময় বড় হয়ে ওঠে বলে রাজনৈতিক সূত্রে দাবি। সে কথা মাথায় রেখেই কেনিয়াট্টা এই বার্তা দেন। কেনিয়াট্টা মুখ খোলার আগে বিরোধী নেতা ওডিঙ্গাও সমর্থকদের উদ্দেশে একজোট হয়ে ভোট বয়কটের কথা বলেন। তা উপেক্ষা করেই ৯১ বছরের জোসেফাইন ওয়াম্বুর মতো বহু আগ্রহী ভোটার পৌঁছে গিয়েছিলেন বুথে।

দুই নেতার দ্বন্দ্বে স্বচ্ছ ও অবাধ ভোট কখনওই সম্ভব নয় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান ওয়াফুলা চিবুকাটি। তিনি বলেন, দুই নেতার উচিত একসঙ্গে বসে নিজেদের মতপার্থক্য নিয়ে আলোচনা করা। যদিও এ বার ব্যাপক হারে বয়কট হওয়ায় ভোট নিয়ে ফের আইনি জটিলতা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে কমিশনের।

Kenya Presidential Election Kisumu Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy