রাজধানী ঢাকার প্রধান পাইকারি বাজারে পুর নির্বাচনের প্রচারে বেরিয়ে ব্যবসায়ীদের তাড়া খেলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তাঁকে নিশানা করে ইট-পাটকেলও ছোড়া হয়, যাতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভাঙে। বেগতিক দেখে নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে গাড়িতে তুলে দ্রুত সরিয়ে নেয়। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যার এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বাদে গোটা দেশে আবার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
জানুয়ারির ৫ তারিখ থেকে টানা ৯২ দিন হরতাল-অবরোধে চালিয়ে গিয়েছে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোট। তাতে জনজীবনে তেমন কোনও প্রভাব না-পড়লেও বিএনপি-জামাত কর্মীদের চোরাগোপ্তা পেট্রোল বোমা হামলায় কয়েকশো ট্রাক পুড়েছে। বাসে আগুনে বোমা ছোড়ায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০০ জন। মারাত্মক ভাবে দগ্ধ হয়েছেন কয়েকশো। এর ফলে ব্যবসায়ীদের কারবার যেমন দিনের পর দিন বন্ধ থেকেছে, তেমনই মালপত্র ও ট্রাক পুড়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। ঢাকার পুর নির্বাচন অরাজনৈতিক হলেও দুই প্রার্থীকে উত্তর ও দক্ষিণ ঢাকায় সমর্থন জানিয়ে প্রচারে নেমেছে বিএনপি। দলের সমর্থিত প্রার্থীর হয়েই সোমবার সন্ধ্যায় কাওরান বাজারে প্রচার করতে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে একটি পথসভার মঞ্চও বানানো হয়েছিল। কিন্তু খালেদা হাজির হতেই উত্তেজনা তৈরি হয়। কিছু মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। খালেদার নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁদের বাধা দিলে হাতাহাতি বেধে যায়। তার পরেই আশপাশের বহুতল বাজারগুলি থেকে খালেদার গাড়ির বহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হতে থাকে। বিএনপি-জামাত জোটের নেত্রীর গায়ে তা না-পড়লেও তাঁর গাড়ির কাচ ভঙে যায়। কয়েক জন নিরাপত্তা রক্ষী ও সাংবাদিক ইটের ঘায়ে আহত হন।
কিন্তু মঙ্গলবারই বিএনপি দাবি করে প্রচারের সময়ে খালেদাকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। এমনকী তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগও করা হয়েছে। খালেদার উপদেষ্টা ফজলে এলাহি আকবর দাবি করেন, শাসক দলের কর্মীরা খালেদাকে খুন করার লক্ষ্যেই পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল। তবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘‘পরিকল্পিত হামলার ঘটনাটি সত্য নয়। ৯২ দিন অবরোধ-হরতালে সাধারণ মানুষের মতো কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরাও ক্ষিপ্ত ছিলেন। খালেদা জিয়া সেখানে গেলে তাঁরা প্রতিবাদ জানান। কিন্তু খালেদার নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের ওপর চড়াও হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।’’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘নাটক করছেন খালেদা।’’ ঘটনার পরেই তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেত্রীর নিরাপত্তা রক্ষীরাই মানুষের ওপর চড়াও হয়ে উত্তজনা ছড়িয়েছেন, এমনকী গুলিও চালিয়েছেন তাঁরা। খালেদাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘আপনার নিরাপত্তা রক্ষীদের সামলান। মানুষের জান-মাল নিয়ে আর যেন খেলা না-হয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy