Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাষা শহিদদের রক্তঝরা দিনে আবেগের শপথ

আর কয়েক মূহুর্তের অপেক্ষা।তার পরেই ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানতে লাখো মানুষের ঢল পরবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আর এই উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির কাজও শেষ হয়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। রং আর আলপনায় সাজানো হয়েছে পুরো শহিদ মিনার এলাকা। নিরাপত্তা জোরদার করতে দুপুর থেকেই টহল দিতে দেখা গিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীর সদস্যদের।

জুলফিকার রাসেল
ঢাকা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২১:৩৪
Share: Save:

আর কয়েক মূহুর্তের অপেক্ষা।

তার পরেই ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানতে লাখো মানুষের ঢল নামবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। আর এই উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতির কাজও শেষ হয়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। রং আর আলপনায় সাজানো হয়েছে পুরো শহিদ মিনার এলাকা। নিরাপত্তা জোরদার করতে দুপুর থেকেই টহল দিতে দেখা গিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষী বাহিনীর সদস্যদের।

শনিবার বিকেলে সর্বশেষ প্রস্তুতির খবর জানতে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় রং আর আলপনার কাজ শেষে চলছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা শহিদ মিনারে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। সন্ধ্যার পর থেকেই শহিদ মিনারে আসা সাধারণ দর্শনার্থীদের বের করে দেয় পুলিশ।দোয়েল চত্ত্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সহ শহিদ মিনারে প্রবেশের রাস্তাগুলোতে ব্যারিকেড বসিয়ে পাহারা দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশ-কর্মীদের।

এ দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে আসা সর্বসাধারনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শহিদ মিনার এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে ‘র‌্যাব’। পুরো এলাকায় নজরদারি রাখতে স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এ ছাড়াও সব সময়ের নিরাপত্তা দিতে কাজ করবে সাড়ে ৮ হাজার পুলিশকর্মী সহ ‘র‌্যাবে’র বম্ব স্কোয়াড ও স্ট্রাইকিং ফোর্স।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।

এ দিকে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০১৬ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি’ আজিমপুর কবরস্থান ও কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপ প্রণয়ন করেছে। এ সব এলাকায় যাতায়াতের পথচারীদেরকে রুট-ম্যাপ অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

রুট-ম্যাপ অনুযায়ী শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জনসাধারণ পুরনো হাইকোর্টের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল ক্রসিং, বাংলা একাডেমী, টিএসসি মোড়, উপাচার্য ভবনের পাশ দিয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড়, নিউ মার্কেট-ক্রসিং পার হয়ে আজিমপুর কবরস্থানের উত্তর দিকের গেট দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ এবং শহিদদের কবর জিয়ারতের পর আজিমপুর কবরস্থানেরমূল গেট (দক্ষিণ দিকের) দিয়ে বের হয়ে আজিমপুর সড়ক হয়ে পলাশী মোড় ও ফুলাররোড মোড় অর্থাৎ সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহিদ মিনারে যেতে বলা হয়েছে।কবরস্থানে না গিয়ে বিকল্প পথে যারা শহিদ মিনারে যেতে চান তারা উপাচার্য ভবন পার হয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি মোড় থেকে বাঁ দিকের রাস্তা দিয়ে (জহুরুল হক হলেরপশ্চিমের রাস্তা) সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে শহিদ মিনারে যেতে পারবেন। নিউ মার্কেট ক্রসিং থেকে হোম ইকোনমিক্স ও ইডেন কলেজের সামনের রাস্তা দিয়েও আজিমপুর (বেবী আইসক্রিম) মোড়, পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা হয়ে শহিদ মিনারে যাওয়া যাবে। তা ছাড়া, চাঁনখার পুল এলাকা থেকে বক্সিবাজার মোড় হয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের রাস্তা দিয়েও পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ হল ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে শহিদ মিনারে যাওয়া যাবে । তবে টিএসসি মোড় থেকে জগন্নাথ হলের পূর্ব পাশের রাস্তা অর্থাৎ শিব বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়ে শহিদ মিনারে ও মেডিকেল কলেজে যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।উপাচার্য ভবন গেট থেকে ফুলার রোড হয়ে ফুলার রোড মোড় পর্যন্ত রাস্তা এবং চাঁনখার পুলথেকে কার্জন হল পর্যন্ত রাস্তা জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

এ ছাড়া, শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্ত্বর ও পেছনের রাস্তা দিয়ে চাঁনখার পুল হয়ে শুধুমাত্র প্রস্থান করা যাবে।তবে শহিদ মিনারের দিকে আসা যাবে না। যোগাযোগ করা হলে একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘‘সব ধরনের প্রস্তুতির কাজ শেষ। এখন শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পালা। অন্য যে কোনও বারের তুলনায় এ বার নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক কঠোর থাকবে। যাতে কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।’’সর্বসাধারণের প্রতি শৃঙ্খল থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন,‘‘যারা শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন তাঁদের সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে, কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাঁরা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না।’’

লেখক বাংলা ট্রিবিউনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dhaka people water ice it
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE