ফের আমেরিকায় আক্রান্ত মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর মূর্তি। উত্তর ক্যালিফর্নিয়ার ডেভিস শহরে সেন্ট্রাল পার্কে ২৯৪ গ্রাম ওজনের ৬ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ব্রোঞ্জের গাঁধী মূর্তিটি ভাঙচুর করে একদল দুষ্কৃতী। এর তীব্র নিন্দা করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ডেভিস শহরের স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সান ফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় কনসুলেট জেনারেলও এই ঘটনার তদন্ত করবে। মনে করা হচ্ছে, খলিস্তানপন্থী কোনও সংগঠনই রয়েছে এই ঘটনার পিছনে। বিশেষত, ভাঙচুরের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে ক্যালিফর্নিয়ার খলিস্তানপন্থী সংগঠনের টুইট সন্দেহ আরও জোরালো করেছে।
মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় ইন্দো-আমেরিকান সম্প্রদায়। তাঁদের বক্তব্য, বিদ্বেষের জেরেই এই হামলা চালানো হয়েছে। মূর্তিটি গোড়ালির থেকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। মাটিতে পড়ে শরীরের ঊর্ধ্বাংশ। উধাও গাঁধীর মুখের একাংশও।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৭ জানুয়ারি ভোরবেলায় সেন্ট্রাল পার্কের এক কর্মী প্রথম দেখতে পান ভেঙে পড়ে রয়েছে গাঁধীমূর্তিটি। ডেভিস সিটির কাউন্সিলম্যান লুকাস ফ্রেরিকস জানিয়েছেন, নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে ভাঙা মূর্তিটি। কখন এবং কী উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
গাঁধীমূর্তিটি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল ডেভিস শহরে। স্থানীয় সিটি কাউন্সিল চার বছর আগে মূর্তিটি সেন্ট্রাল পার্কে বসানোর বন্দোবস্ত করে। সেই সময়ে ভারত বিরোধী সংগঠন ‘অর্গ্যানাইজেশন ফর মাইনোরিটিস ইন ইন্ডিয়া’ (ওএফএমআই) এর চরম বিরোধিতা করেছিল। যদিও সেই বিরোধকে কোনও ভাবে পাত্তা দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তার পর থেকেই ওএফএমআই মূর্তি সরানোর দাবিতে অনড় থেকেছে।
অবশিষ্ট: গোড়ালির উপর থেকে মূর্তির বাকিটা মাটিতে। ছবি: টুইটার।
ফ্রেন্ডস অব ইন্ডিয়া সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল (ফিসি)-এর গুরুং দেশাই জানিয়েছেন, বহু দিন ধরেই ভারত বিরোধী এবং হিন্দু বিরোধী কিছু সংগঠন যেমন ওএফএমআই এবং খলিস্তানিরা বরাবরই বিদ্বেষের বাতাবরণ তৈরি করে রেখেছে। বিদ্বেষমূলক মনোভাবের পাশাপাশি ভারতীয় আইকনদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এমনকি ক্যালিফর্নিয়ায় পাঠ্যবই থেকেও ভারত সংক্রান্ত বিষয়গুলি সরাতে বরাবরই সক্রিয় এই সংগঠনগুলি।
হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন (হাফ) মূর্তি ভাঙার নিন্দা করে হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি এবং এফবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে। মূর্তিটি মেরামত করে আগের অবস্থানে ফেরানোর দাবিও রাখা হয়েছে। গত ডিসেম্বরেও ওয়াশিংটন ডিসি-র ভারতীয় দূতাবাসের সামনের গাঁধীমূর্তিটি ভাঙচুর করেছিল খলিস্তানি সংগঠন।