মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ়ু। — ফাইল চিত্র।
এক দিন আগেই মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েছেন মহম্মদ মুইজ়ু। তার পরেই শনিবার প্রেসিডেন্টের দফতর ঘোষণা করল, সে দেশ থেকে সেনা সরাতে ভারতকে সরকারি ভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। মুইজ়ুর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সে দেশে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। নিজের দফতরে বসে তাঁকে এই অনুরোধ করেছে মলদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট।
মলদ্বীপে ভারতের ৭০ জন সেনা রয়েছে। ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রে নজরদারির কাজে সে দেশের স্থলসেনা এবং বায়ুসেনাকে সহায়তা করে থাকে ভারতীয় সেনা। দেশটির অর্থনৈতিক অঞ্চলের চারপাশে টহল দেয় ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ। মোতায়েন রয়েছে বেশ কিছু কপ্টার, যেগুলি মলদ্বীপের নাগরিকদের নির্জন দ্বীপ থেকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। সূত্রে খবর, ভারতের এই কপ্টারের কারণে যে সে দেশের উপকার হয়েছে, তা ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুইজ়ু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে মলদ্বীপ থেকে বিদেশি সেনা সরাবেন। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিকেও এই নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতীয় সেনাকে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার শপথ নেওয়ার পরও একই কথা বলেন ‘চীনপন্থী’ বলে পরিচিত এই নেতা। মনে করা হচ্ছে, এর পরেই প্রতিশ্রুতি পালনে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মুইজ়ু। নির্বাচনে জয়ের পরেই এই বিষয়ে সক্রিয়তা দেখিয়েছেন মুইজ়ু। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, মলদ্বীপে দীর্ঘ দিন ধরেই ভারতের সেনা রয়েছে। কিন্তু দেশের ‘সার্বভৌমত্বে’র কথা মাথায় রেখে ওই সেনাদের মলদ্বীপ ছাড়তে বলেছেন মুইজ়ু। মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট এ-ও জানান যে, অন্য কোনও দেশেও বিদেশি সেনা থাকলে তিনি একই কথা বলতেন।
অক্টোবরের গোড়ায় মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে এলে দেখা যায়। মোট বৈধ ভোটের ৫৪.০৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন মুইজ়ু। তার পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, নির্বাচনে হার মানতে হয়েছে সোলিকে। মলদ্বীপের এই সাধারণ নির্বাচনে নজর ছিল ভারতেরও। কারণ সোলির ‘দিল্লিঘেঁষা’ নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েই ভোটের ময়দানে নেমেছিল বিরোধী দলগুলি।
২০১৮ সাল পর্যন্ত মলদ্বীপের শাসনক্ষমতায় ছিলেন চিনপন্থী প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। তাঁর সময় চিনা ঋণ নিয়ে দেশে একাধিক পরিকাঠামোগত নির্মাণ করেন তিনি। ইয়ামিনের ভাবশিষ্য বলে পরিচিত মুইজ়ু এই সমস্ত কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ইয়ামিনকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসেন সোলি। ইয়ামিনের বিরুদ্ধে স্বৈরশাসনের অভিযোগ উঠলেও তাঁর পরাজয়ের নেপথ্যে ভারতের হাত ছিল বলে মনে করেন সে দেশের রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। ভারত অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy