ফের বিরূপ বার্তা দিল মলদ্বীপ। নয়াদিল্লি বার বার বলছে, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হোক। সে পরামর্শ মানেননি প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। বরং তাঁর সরকার ভারতের বিরুদ্ধে কড়া বয়ান দিয়েছে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে নয়াদিল্লি আয়োজিত ১৬ দেশের নৌ-মহড়া থেকেও সরে দাঁড়াল মলদ্বীপ।
যে নৌ-মহড়ার জন্য ভারত আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মলদ্বীপকে, ‘মিলন’ নামের সেই মহড়াটি দু’বছরে এক বার হয়। এ বছর আন্দামান ও নিকোবর সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত হয়েছে মহড়াটি। শুরু হবে ৬ মার্চ। চলবে ৮ দিন।
অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, মরিশাস, ওমান, নিউজিল্যান্ডের মতো মলদ্বীপও ভারতকে জানিয়েছিল, মহড়ায় তারা যোগ দিচ্ছে। কিন্তু প্রায় শেষ মুহূর্তে এসে মলদ্বীপ মহড়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। ভারতের নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা মঙ্গলবার নিজেই জানিয়েছেন যে, মলদ্বীপ এ বারের ‘মিলন’-এ যোগ দিচ্ছে না। ‘‘এই সিদ্ধান্ত তারা কেন নিল, সে কথা মলদ্বীপ জানায়নি’’, বলেছেন অ্যাডমিরাল লানবা।
ভারত মহাসাগরে চিনের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা রুখতে ভারতীয় নৌসেনা যে ভাবে তৎপরতা বাড়াচ্ছে, সেই তৎপরতায় সামিল হতে চায় না মলদ্বীপ— এমন বার্তাই কি দেওয়ার চেষ্টা হল দ্বীপরাষ্ট্রের তরফ থেকে? ছবি: এএফপি।
ভারত মহাসাগরের নানা অংশে যে ভাবে গতিবিধি বাড়াচ্ছে চিনা নৌসেনা, তার প্রেক্ষিতে তৎপরতা বাড়ানোর নীতি নিয়েছে ভারতীয় নৌসেনাও। শুধু ভারত মহাসাগরে নয়, গোটা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেই হাত মিলিয়ে তৎপরতা বাড়িয়েছে ভারত-জাপান-অস্ট্রেলিয়া। নয়াদিল্লির আয়োজনে ১৬ দেশের যৌথ নৌ-মহড়াকেও ভারতীয় তৎপরতীর অঙ্গ হিসেবেই দেখেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
আরও পড়ুন: বিরতিতেও হানা, সিরিয়া অশান্তই
আরও পড়ুন: উঠেছে দেওয়াল, দেশ হারিয়েছে জুমা পরিবার
চিনের অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনেই এই মহড়া থেকে সরে দাঁড়াল মলদ্বীপ— বলছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের প্রতিটি পদক্ষেপকেই যে চিন সমর্থন করছে, তা আর গোপন নয়। আর ইয়ামিনের বিরোধী পক্ষ যে বার বার ভারতীয় হস্তক্ষেপের আর্জি জানাচ্ছে, সেও সকলের জানা। এই পরিস্থিতিতে ভারত আয়োজিত মহড়া থেকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ যে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের কাছে পৌঁছবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল বলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদদের মত।