Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
New Zealand

গার্হস্থ্য হিংসার শিকার থেকে বিদেশে পুলিশে চাকরি, রূপকথাকে হার মানায় মনদীপের গল্প

ভাল ইংরাজি বলতে না পারা সেই মহিলা দরজায় দরজায় জিনিস বেচতে বেচতে এক দিন হয়ে উঠলেন নিউজিল্যান্ড পুলিশের অফিসার!

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২১ ১১:৩২
Share: Save:
০১ ১৮
গার্হস্থ্য হিংসার শিকার ছিলেন। এই নির্যাতনের মাঝে আবার গুরুদায়িত্ব নেমে আসে ঘাড়ে। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দেন। তার দু’বছরের মধ্যে আরও এক সন্তানের মা হন তিনি।

গার্হস্থ্য হিংসার শিকার ছিলেন। এই নির্যাতনের মাঝে আবার গুরুদায়িত্ব নেমে আসে ঘাড়ে। বিয়ের এক বছরের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দেন। তার দু’বছরের মধ্যে আরও এক সন্তানের মা হন তিনি।

০২ ১৮
কিন্তু বিবাহিত জীবন যত এগোচ্ছিল ততই গার্হস্থ্য হিংসাও বাড়ছিল তাঁর উপর। দুই সন্তানকে বড় করা, নিজেকে স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা করা সব মিলিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন।

কিন্তু বিবাহিত জীবন যত এগোচ্ছিল ততই গার্হস্থ্য হিংসাও বাড়ছিল তাঁর উপর। দুই সন্তানকে বড় করা, নিজেকে স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা করা সব মিলিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন।

০৩ ১৮
শেষমেশ কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। সংসার ত্যাগ করে মা-বাবার কাছে চলে আসেন। কিন্তু সেখানেও সমস্যার শেষ ছিল না। বাবার একার উপার্জনে সংসার চালানো ছিল অসম্ভব। শেষে উপার্জনের জন্য সন্তানদের মা-বাবার কাছে রেখে কিছু ঋণ করে পাড়ি দেন সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়।

শেষমেশ কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। সংসার ত্যাগ করে মা-বাবার কাছে চলে আসেন। কিন্তু সেখানেও সমস্যার শেষ ছিল না। বাবার একার উপার্জনে সংসার চালানো ছিল অসম্ভব। শেষে উপার্জনের জন্য সন্তানদের মা-বাবার কাছে রেখে কিছু ঋণ করে পাড়ি দেন সুদূর অস্ট্রেলিয়ায়।

০৪ ১৮
মনে ছিল উচ্চাকাঙ্খা। কিন্তু শুরু করেছিলেন একেবারে নীচের ধাপ থেকে। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভর করেই ভাল ইংরাজি বলতে না পারা সেই মহিলা দরজায় দরজায় জিনিস বেচতে বেচতে এক দিন হয়ে উঠলেন নিউজিল্যান্ড পুলিশের অফিসার!

মনে ছিল উচ্চাকাঙ্খা। কিন্তু শুরু করেছিলেন একেবারে নীচের ধাপ থেকে। এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভর করেই ভাল ইংরাজি বলতে না পারা সেই মহিলা দরজায় দরজায় জিনিস বেচতে বেচতে এক দিন হয়ে উঠলেন নিউজিল্যান্ড পুলিশের অফিসার!

০৫ ১৮
নিউজিল্যান্ড পুলিশের উচ্চপদে কর্মরত হিসাবে তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা। নিজের হাসিখুশি জীবনকে এক সময়ে ইতিহাস ভাবতে চলা তিনিই আজ বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন।

নিউজিল্যান্ড পুলিশের উচ্চপদে কর্মরত হিসাবে তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা। নিজের হাসিখুশি জীবনকে এক সময়ে ইতিহাস ভাবতে চলা তিনিই আজ বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন।

০৬ ১৮
মহিলার নাম মনদীপ কৌর। পঞ্জাবের এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম তাঁর। ১৮ বছর বয়সেই বাবা-মা তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পরও জেদ করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন মনদীপ। কিন্তু দিনের পর দিন স্বামীর অত্যাচার আর সইতে পারছিলেন না।

মহিলার নাম মনদীপ কৌর। পঞ্জাবের এক রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম তাঁর। ১৮ বছর বয়সেই বাবা-মা তাঁর বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পরও জেদ করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন মনদীপ। কিন্তু দিনের পর দিন স্বামীর অত্যাচার আর সইতে পারছিলেন না।

০৭ ১৮
তার উপর ১৯ বছর বয়সে প্রথম সন্তানের মা হন তিনি। জীবন যেন আরও দূর্বিষহ হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে। তাও মুখ বুজে সংসার সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু সে সহ্যেরও সীমা ভাঙল এক দিন।

তার উপর ১৯ বছর বয়সে প্রথম সন্তানের মা হন তিনি। জীবন যেন আরও দূর্বিষহ হয়ে উঠেছিল তাঁর কাছে। তাও মুখ বুজে সংসার সামলাচ্ছিলেন। কিন্তু সে সহ্যেরও সীমা ভাঙল এক দিন।

০৮ ১৮
সন্তানদের বয়স যখন ৬ এবং ৮ বছর, স্বামীর ঘর ছাড়েন মনদীপ। মা-বাবার কাছে চলে আসেন। কাজের খোঁজ শুরু করেন। এক পরিচিতের কথায় তিনি সন্তানদের ছেড়ে পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়ায়।

সন্তানদের বয়স যখন ৬ এবং ৮ বছর, স্বামীর ঘর ছাড়েন মনদীপ। মা-বাবার কাছে চলে আসেন। কাজের খোঁজ শুরু করেন। এক পরিচিতের কথায় তিনি সন্তানদের ছেড়ে পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়ায়।

০৯ ১৮
কোথায় থাকবেন, কী কাজ করবেন কিছুই জানা ছিল না। এত খোঁজ খবর নেওয়ার মতো মানসিক পরিস্থিতিও ছিল না তাঁর। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি।

কোথায় থাকবেন, কী কাজ করবেন কিছুই জানা ছিল না। এত খোঁজ খবর নেওয়ার মতো মানসিক পরিস্থিতিও ছিল না তাঁর। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি।

১০ ১৮
সেখানে গিয়ে সেলসম্যানের কাজ পেয়ে যান। ঠিক মতো ইংরাজি বলতে পারতেন না। তাই যা বলতে চাইতেন সবটাই কাগজে লিখে নিয়ে যেতেন।

সেখানে গিয়ে সেলসম্যানের কাজ পেয়ে যান। ঠিক মতো ইংরাজি বলতে পারতেন না। তাই যা বলতে চাইতেন সবটাই কাগজে লিখে নিয়ে যেতেন।

১১ ১৮
এর পর ১৯৯৯ সাল নাগাদ তিনি নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন। সেখানে ট্যাক্সি চালাতে শুরু করেন তিনি। অকল্যান্ডের একটি লজে থাকতে শুরু করেন।

এর পর ১৯৯৯ সাল নাগাদ তিনি নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন। সেখানে ট্যাক্সি চালাতে শুরু করেন তিনি। অকল্যান্ডের একটি লজে থাকতে শুরু করেন।

১২ ১৮
সেখানেই তাঁর সঙ্গে জন পেগলার নামে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। লজের রিসেপশনে কাজ করতেন জন। তিনি ছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। অবসরের পরে ওই লজে কাজ করতেন।

সেখানেই তাঁর সঙ্গে জন পেগলার নামে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। লজের রিসেপশনে কাজ করতেন জন। তিনি ছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। অবসরের পরে ওই লজে কাজ করতেন।

১৩ ১৮
মনদীপের কাছে জন ছিলেন বাবার মতো। মনদীপের সঙ্গে সময় কাটানো, তাঁর কষ্টের কাহিনি শোনা এবং কাজ থেকে ফিরলে এক কাপ গরম কফি করে দেওয়া, সবই করতেন জন।

মনদীপের কাছে জন ছিলেন বাবার মতো। মনদীপের সঙ্গে সময় কাটানো, তাঁর কষ্টের কাহিনি শোনা এবং কাজ থেকে ফিরলে এক কাপ গরম কফি করে দেওয়া, সবই করতেন জন।

১৪ ১৮
জনের কাছে এক বার পুলিশ হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মনদীপ। আর সেটাই ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত।

জনের কাছে এক বার পুলিশ হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মনদীপ। আর সেটাই ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত।

১৫ ১৮
সাঁতার শেখানো, দৌড়, নিজেকে ফিট করে তোলার সমস্ত অনুশীলন শুরু হয় তাঁর। জন এবং তাঁর পরিবার ক্রমাগত সাহায্য করতে থাকে মনদীপকে।

সাঁতার শেখানো, দৌড়, নিজেকে ফিট করে তোলার সমস্ত অনুশীলন শুরু হয় তাঁর। জন এবং তাঁর পরিবার ক্রমাগত সাহায্য করতে থাকে মনদীপকে।

১৬ ১৮
২০০২ সালে সন্তানদেরও নিউজিল্যান্ড নিয়ে আসেন তিনি। তার দু’বছর পর  প্রথম পুলিশের পোশাক গায়ে চাপান মনদীপ। কনস্টেবল হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

২০০২ সালে সন্তানদেরও নিউজিল্যান্ড নিয়ে আসেন তিনি। তার দু’বছর পর প্রথম পুলিশের পোশাক গায়ে চাপান মনদীপ। কনস্টেবল হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

১৭ ১৮
কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল অফিসার হওয়ার। একাধিক বার পদোন্নতির চেষ্টা বিফল হয়। শেষমেশ একজন সিনিয়র সার্জেন্ট হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি নিউজিল্যান্ড পুলিশের উচ্চপদে কর্মরত।

কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল অফিসার হওয়ার। একাধিক বার পদোন্নতির চেষ্টা বিফল হয়। শেষমেশ একজন সিনিয়র সার্জেন্ট হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি নিউজিল্যান্ড পুলিশের উচ্চপদে কর্মরত।

১৮ ১৮
মনদীপের বয়স এখন ৫২ বছর। তাঁর সন্তানরাও বড় হয়ে গিয়েছেন। পাকাপাকি ভাবে নিউজিল্যান্ডেই থাকেন তাঁরা। এমনকি নাতিও হয়ে গিয়েছে তাঁর।

মনদীপের বয়স এখন ৫২ বছর। তাঁর সন্তানরাও বড় হয়ে গিয়েছেন। পাকাপাকি ভাবে নিউজিল্যান্ডেই থাকেন তাঁরা। এমনকি নাতিও হয়ে গিয়েছে তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE