Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

তিন দেশ সড়ক প্রকল্পে বেঁকে বসল মায়ানমার

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে, মায়ানমারকে ফের বোঝানোর একটা শেষ চেষ্টা করা হবে চলতি মাসের শেষে।

কয়েক মাস আগে এই মায়ানমারই আগ্রহ দেখিয়ে চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছিল। প্রতীকী ছবি।

কয়েক মাস আগে এই মায়ানমারই আগ্রহ দেখিয়ে চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছিল। প্রতীকী ছবি।

অগ্নি রায়
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৬
Share: Save:

পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রগুলিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে যখন চিন-বিরোধী ঐক্যের এক কৌশলগত অক্ষ তৈরি করতে চাইছে নয়াদিল্লি, ঠিক তখনই এল বড় ধাক্কা! ভারত, মায়ানমার ও তাইল্যান্ডের মধ্যে সড়ক যোগ গড়ে তোলার প্রস্তাবিত ‘মোটর ভেহিক্যাল প্রকল্প’ থেকে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়াল আউং সান সু চি-র দেশ। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ জানিয়েছেন, ‘‘মায়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা এই প্রকল্পের পুনর্মূল্যায়ন করতে চায়। অন্যান্য দেশের মধ্যে যেখানে-যেখানে এই রকম ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখে তবেই এগোতে চায় তারা।’’ কয়েক মাস আগে এই মায়ানমারই আগ্রহ দেখিয়ে চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের অনুমান, তাদের এই সিদ্ধান্ত বদলের পিছনে হাত রয়েছে বেজিংয়ের।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হচ্ছে, মায়ানমারকে ফের বোঝানোর একটা শেষ চেষ্টা করা হবে চলতি মাসের শেষে। ভারত-আসিয়ান সম্পর্কের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্মেলন শুরু হচ্ছে ভারতে। আসছেন মায়ানমারের ‘স্টেট কাউন্সিলর’ সু চি-ও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে।

মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে পণ্য এবং রাজনৈতিক যোগাযোগ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। এ নিয়ে দৌত্যও কিছু কম করেননি। ক্ষমতায় আসার ৭ মাসের মধ্যেই গিয়েছিলেন মায়ানমার সফরে। ভারত-মায়ানমার-তাইল্যান্ড হাইওয়ে তথা মোটর ভেহিক্যাল চুক্তির পরিকল্পনাটি শুরু হয় তখনই।

ভাবনাটি ছিল মণিপুরের মোরে থেকে শুরু হযে সড়ক এগোবে তামু, কালেওয়া হয়ে। তার পরে মায়নমারের মান্দালয়, মাওয়ালমাইন হয়ে তাইল্যান্ডের মায়ে সত পর্যন্ত পৌঁছবে। মোট ১ হাজার ৩৬০ কিলোমিটার মোটরপথ। ভারত এতটাই নিশ্চিত ছিল এই হাইওয়ে নিয়ে যে, ইতিমধ্যেই তামু-কাইগন-কালেওয়া সেক্টরে ৬৯টি সেতুর বরাত দিয়ে দিয়েছিল। মায়নমারের কালেয়া-অয়ারর্গি সেকশনের ১২০.৭৪ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতের জন্য টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করে নয়াদিল্লি। এই নিয়ে তিন দেশের কর্তাদের প্রাথমিক বৈঠকও হয়। চার মাস আগে মায়ানমার সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন সু চি-র সঙ্গে। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্করও গত মাসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যান সে দেশের সংশ্লিষ্ট আমলাদের সঙ্গে।

এত কিছুর পরে মায়ানমারের তরফে যাবতীয় উদ্যোগে জল ঢেলে দেওয়াটা ভারতের কাছে কিছুটা মুখ পোড়ার মতো। কারণ, চিনের ‘ওবর’ প্রকল্পের প্রবল বিরোধিতা করে সাউথ ব্লক বারবার এই তিন দেশীয় সড়ক যোগাযোগ প্রকল্পটিকে তুলে ধরেছে। নয়াদিল্লির বক্তব্য, এটি তাদের নিজস্ব সংযোগ-উদ্যোগ, যা অন্য কোনও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে ব্যাহত না করেই আঞ্চলিক বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, শেষ মুহূর্তে মায়ানমারের পিছিয়ে আসার পিছনে কলকাঠি নেড়েছে বেজিংই।

অন্য বিষয়গুলি:

Mayanmar Motor Vehicle Project Delhi Thailand মোটর ভেহিক্যাল প্রকল্প মায়ানমার দিল্লি তাইল্যান্ড
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy