Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সফল, জানালেন কিম

গত কাল রাশিয়ার একেবারে পূর্ব প্রান্তের বন্দর শহর ভ্লাদিভস্তকে পৌঁছেছিলেন কিম। কথা ছিল আজই তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

পুরনো বন্ধু: উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভ্লাদিভস্তকে। এপি

পুরনো বন্ধু: উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভ্লাদিভস্তকে। এপি

সংবাদ সংস্থা
মস্কো শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

দু’মাস আগেই হ্যানয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল মাঝপথে। তবে এ বার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে দাবি করলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন।

গত কাল রাশিয়ার একেবারে পূর্ব প্রান্তের বন্দর শহর ভ্লাদিভস্তকে পৌঁছেছিলেন কিম। কথা ছিল আজই তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সেই মতো আজ দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বেশ খানিক ক্ষণ আলোচনা সারেন। কিম বললেন ‘‘বৈঠক সফল।’’ পুরনো বন্ধুর পাশে দাঁড়ালেন পুতিনও। বৈঠক শেষে জানালেন, উত্তর কোরিয়া যদি সম্পূর্ণ ভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের রাস্তায় হাঁটে তা হলে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশকেও উত্তর কোরিয়ার পাশে দাঁড়াতে হবে। উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য প্রচ্ছন ভাবে আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছেন পুতিন।

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সুসম্পর্ক আজকের নয়। বেজিংয়ের মতোই মস্কোও পিয়ংইয়্যাংয়ের দীর্ঘদিনের বন্ধু। কিন্তু মাঝের বেশ কয়েকটা বছর আমেরিকার সঙ্গে প্রবল দ্বন্দ্ব চলাকালীন চিনের উপরে একটু বেশিই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল উত্তর কোরিয়া। মস্কোর সঙ্গে বৈঠক অনেক দিন ধরেই ঝুলে ছিল। গত বছর থেকে কিম এবং ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্ক একটু শোধরানোয় আমেরিকার সঙ্গেই দু’দফা আলোচনা সারেন কিম। আমেরিকার একের পর এক নিষেধাজ্ঞার ফলে এমনিতেই উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি ধুঁকছে। হ্যানয়ের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ফের রাশিয়ার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছিল পিয়ংইয়্যাং। চিন ছাড়া রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশও যে তাঁদের পাশে রয়েছে তা প্রমাণ করতে এখন কার্যত মরিয়া কিম। আর অন্য দিকে, পুতিনও কোরীয় উপদ্বীপ নিয়ে কিমের সঙ্গে আলোচনার জন্য ব্যগ্র হয়ে উঠেছিলেন বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম। কারণ বিশ্বের অন্য শক্তিধর দেশগুলির মতো ওই উপদ্বীপে নজর রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টেরও। তাঁর দেশও যে ওই এলাকায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেটা পুতিনও গোটা বিশ্ব, বিশেষত আমেরিকাকে, দেখাতে চান বলে দাবি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম। একই সঙ্গে আমেরিকা ও চিনের মতো উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়েও চিন্তিতমস্কো। সব মিলিয়ে আজকের বৈঠক তাই দু’দেশের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে মনে করছেন অনেকে।

কাল ভ্লাদিভস্তক পৌঁছনোর পরপরই কিমকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছিল। পরে নিরাপত্তায় মোড়া এক গাড়িতে করে তাঁকে হোটেল পাঠানো হয়। আজ সকালে দু’দেশের প্রধান মুখোমুখি বসেন। পুতিন জানিয়েছেন তিনিও কোরীয় উপদ্বীপে সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চান। তবে তাঁর বক্তব্য, আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করেই এ পথে এগোনো উচিত। রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘ছয় দেশের স্থগিত আলোচনা ফের শুরু হওয়া দরকার।’’ ২০০৩ সালে দুই কোরিয়া, চিন, জাপান, রাশিয়া আর আমেরিকার মধ্যে কোরীয় উপদ্বীপ আর দুই কোরিয়ার শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা পর্ব শুরু হয়েছিল বটে। কিন্তু সেটাও মাঝপথে থমকে রয়েছে বহু বছর। রুশ বিদেশ মন্ত্রক এখন সেই আলোচনাই নতুন করে শুরু করতে চাইছে। কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফেরাতে এই ছ’টি দেশের একসঙ্গে কথা বলা একান্ত জরুরি বলে মনে করছে মস্কো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vladimir Putin Kim Jong Un Russia North Korea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE