মনিকা লিউইনস্কি ও কেনেথ স্টার
দু’জনের কখনও দেখা হয়নি। তাই বলে তাঁরা যে পরস্পরের অপরিচিত, সে কথা আদপেই বলা যাবে না।
কুড়ি বছর আগের কথা। কিন্তু সে সব দিন তো মনিকা এখনও ভোলেননি। ভুলবেনই বা কী করে! আর এখন, ভদ্রলোকের মুখোমুখি হয়ে, তিনি ভেবেই পাচ্ছিলেন না, কী বলবেন।
‘‘জিভের ডগায় যদিও তখন চলে এসেছে— আপনার জন্যই তো আমাকে নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছিল। কিন্তু রেস্তরাঁয়, সকলের সামনে, তো এ সব কথা বলা যায় না,’’ বললেন মনিকা। তত ক্ষণে অবশ্য করমর্দনের জন্য হাত এগিয়ে দিয়েছেন ভদ্রলোক নিজেই— ‘‘হ্যালো, আমি কেন, কেনেথ স্টার।’’
প্রাক্তন স্পেশ্যাল প্রসিকিউটরের সঙ্গে তাঁর প্রথম মোলাকাতটা এ ভাবেই হয়েছিল, সম্প্রতি জানিয়েছেন মনিকা লিউইনস্কি। হোয়াইট হাউসের ইন্টার্ন মনিকার সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্যের জন্য প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন এই কেনেথ স্টার-ই।
গত বছর বড়দিনের আগের সন্ধে। নিউ ইয়র্কের একটা রেস্তরাঁয় কেনেথের সঙ্গে হঠাৎ দেখা হয়ে যায় মনিকার। সেই সাক্ষাৎ সম্বন্ধে একটি পত্রিকায় মনিকা লিখেছেন, ‘‘টুপি পরা লোকটির মধ্যে বেশ একটা দার্শনিক ভাব রয়েছে। কথাও বলছিলেন যথেষ্ট বাৎসল্যের সুরে। কিন্তু কয়েক মিনিট কথা বলার পরেই একটা অস্বস্তি হতে শুরু করে। যে ভাবে আমার হাত ও কনুই স্পর্শ করছিলেন, সেটাও যথেষ্ট অস্বস্তিজনক।’’ মনিকার কথায়, ‘‘কেনেথ আমায় জিজ্ঞাসা করলেন, আমি ঠিক আছি তো? তাঁর প্রশ্নের মধ্যে যেন একটা খোঁচা লুকিয়ে ছিল, এত কিছুর পরে তো আমার ভাল থাকার কথা নয়!’’
মনিকা লিখেছেন, ‘‘সে দিন রেস্তরাঁয় আমার সঙ্গে আমার পরিবারের বেশ কয়েক জন ছিলেন। সকলের সঙ্গে কেনেথের আলাপ করিয়ে দিই। ওঁকে বোঝাতে চেষ্টা করছিলাম, শুধু আমি নয়, আমার পরিবারের সকলের জীবনই দুর্বিষহ করে তুলেছিলেন উনি। কিন্তু উনি শুধু বললেন, ‘পরিস্থিতিটা সত্যিই দুঃখজনক ছিল’। আমার মাকে হুমকি দেওয়ার জন্য, আমার বাবার ডাক্তারি প্র্যাকটিস সম্বন্ধে প্রশ্ন তোলার জন্য এক বারের জন্যও ক্ষমা চাইলেন না।’’
মনিকা জানিয়েছেন, #মিটু আন্দোলন তাঁকে নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। ৪৪ বছরের টিভি তারকার কথায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট আর হোয়াইট হাউসের এক ইন্টার্নের মধ্যে যে ক্ষমতার বিপুল ফারাক থাকবেই, তা তখন না বুঝলেও এখন বুঝতে পারি। আমার মতামত নিয়ে সেই সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল কি না, এই প্রশ্নটা সত্যিই অপ্রাসঙ্গিক।’’
এ বছরই দু’দশক পূর্ণ হল মনিকাগেট কেলেঙ্কারির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy