দুপুর সাড়ে ৩টে হবে। গত কাল পরপর তিনটে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে রাফা। ‘ইন্টারন্যাশনাল কমিটি ফর রেড ক্রস’-এর স্থানীয় কর্তা উইলিয়াম শ্কমবার্গ ভিডিয়ো কনফারেন্সে জানান, এমন দৃশ্য তিনি আগে দেখেননি। চার দিকে মৃতদেহের স্তূপ, রক্তগঙ্গা বইছে। রেড ক্রস চত্বরে জখম মানুষের স্রোত। সকলের মুখে বাঁচার আর্তি।
রাফার যেখানে রেড ক্রসের অফিস, তার কাছেই গোলাবর্ষণ করেছে ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। ২২ জন নিহত। রেড ক্রসের অফিস চত্বরের প্রাচীরও কিছুটা ভেঙেছে। উইলিয়ামের বক্তব্য, এই এলাকাটিকে আইডিএফ-ই ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করেছিল। তিনি আরও বলেন, সব পক্ষ জানে, এখানে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দফতর রয়েছে। অফিসের চারপাশে তাঁবু খাটিয়ে পরিবার নিয়ে থাকছেন কর্মীরা। তবে কাউকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলতে চাননি উইলিয়াম। তিনি বলেন, ‘‘কাউকে দোষারোপ করব না। তবে এমন অনেক ঘটনাই ঘটছে। একটুর জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া... এ ভাবে কাজ করা সম্ভব নয়।’’
উইলিয়াম জানান, রেড ক্রসের কোনও কর্মী মারা যাননি। গুরুতর জখমও হননি কেউ। তবে সেটা ‘মিরাকল’! কর্মীদের পরিবারের দু’টি বাচ্চা অবশ্য প্রাণ হারিয়েছে। রেড ক্রসের ফিল্ড হাসপাতালে যে জখম ব্যক্তিদের নিয়ে আসা হয়েছিল, তাঁদের অনেককেই বাঁচানো যায়নি। উইলিয়াম বলেন, ‘‘অফিস চত্বরের চারপাশে রক্ত। রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। অফিস চত্বরের ভিতরেও ছিন্নভিন্ন দেহাংশ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। সত্যি বলছি, এমন দৃশ্য আমি আগে দেখিনি। আমাদের গোটা দলের কাছেই এই ভয়াবহতা কল্পনাতীত।’’
এ পর্যন্ত, যুদ্ধে ৩৭,৫৫১ জন প্যালেস্টাইনি প্রাণ হারিয়েছেন। রেড ক্রসের ঘটনায় আইডিএফ-এর ব্যাখ্যা, তারা ‘সরাসরি’ রেড ক্রসে কোনও হামলা চালায়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)