বাংলাদেশে কবে হতে পারে নির্বাচন, অবশেষে সেই নিয়ে ইঙ্গিত দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। জাপানের একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষে হতে পারে নির্বাচন। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, যখন নির্বাচন হবে, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসবে, তখন তারা কাজের জন্য ‘নিরাপদ এবং দৃঢ়’ ভিত্তি পাবে সে দেশে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, গত বুধবার জাপানের এনএইচকে সংবাদমাধ্যমকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইউনূস। সেখানেই তিনি জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের শেষে বাংলাদেশে হতে পারে নির্বাচন। কী ভাবে তিনি বাংলাদেশ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করেছেন, তা-ও জানিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, বাংলাদেশ যাতে স্বনির্ভর, শক্তিশালী হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে চায় তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
গণআন্দোলনের জেরে গত বছর অগস্ট মাসে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। এর পরে বাংলাদেশের শাসনভার হাতে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারেরই প্রধান হন নোবেলজয়ী ইউনূস। তিনি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, সেই সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি মনে করি, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। কারণ, এটি ছিল পুরোপুরি বিধ্বস্ত সমাজ, বিধ্বস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা—সব কিছুই বিধ্বস্ত।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক দেশের জন্য নির্বাচন একটি অপরিহার্য পদক্ষেপ। বছরের শেষেই হতে পারে সেই নির্বাচন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা কাজের জন্য ‘নিরাপদ এবং দৃঢ়’ ভিত্তি পাবে বলেও জানিয়েছেন ইউনূস।
আরও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) দীর্ঘ দিন ধরে জাতীয় সংসদের পরবর্তী নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি তুলেছে। তারা অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করছে। খালেদার পুত্র তথা দলে কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে বলেন, ‘‘নির্বাচনী ব্যবস্থা যদি ঠিক করতে না পারি, তবে দেশের কোনও কিছুরই সমাধান হবে না। ঝড়, তুফান, বন্যা, খরা, বৃষ্টি, যা-ই হোক না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যের পথে কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ালে আমরা তাঁদের প্রতিহত করব।’’ যদিও ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত) নেতৃত্ব চাইছেন এ ক্ষেত্রে ইউনূসকে ‘প্রয়োজনীয় সময়’ দিতে। এই নিয়ে দুই দলের সংঘাত কার্যত প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। এই আবহে বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হতে পারে, সেই সময় একটি সাক্ষাৎকারে জানালেন ইউনূস।