Advertisement
E-Paper

মৌলবাদী আর পুলিশ সংঘর্ষে তপ্ত পাকিস্তান

শনিবারের এই ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজধানী ইসলামাবাদ। পরে গোলমাল ছড়ায় লাহৌর, রাওয়ালপিন্ডি-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইসলামাবাদে নিহত হয়েছেন এক নিরাপত্তারক্ষী।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৬
অগ্নিগর্ভ: টায়ার জ্বালিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার পেশোয়ারে। ছবি: এএফপি।

অগ্নিগর্ভ: টায়ার জ্বালিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার পেশোয়ারে। ছবি: এএফপি।

পাকিস্তানের আইনমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসলামাবাদের একটি মূল সড়ক অবরোধ করেছিলেন কট্টরপন্থী মৌলবাদীরা। পুলিশ এবং আধাসেনা সেই অবরোধ তুলতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শনিবারের এই ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রাজধানী ইসলামাবাদ। পরে গোলমাল ছড়ায় লাহৌর, রাওয়ালপিন্ডি-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইসলামাবাদে নিহত হয়েছেন এক নিরাপত্তারক্ষী। জখম হয়েছেন ২০০ জন। হিংসা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিকে ‘ব্লক’ করেছে পাক সরকার। সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব ক’টি চ্যানেলের। পরে ইসলামাবাদে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ১৫০ জন।

সেপ্টেম্বরে মন্ত্রীদের শপথ বাক্যে পরিবর্তন করেছেন পাক আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদ। সেই কারণে হামিদের পদত্যাগের দাবিতে ইসলামাবাদ এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন কট্টরপন্থী মৌলবাদীদের সংগঠন তেহরিক ই খতম ই নবুওত, তেহরিক ই লাবাইক ইয়া রসুল আল্লাহ এবং সুন্নি তেহরিক পাকিস্তান-এর প্রায় ২,০০০ কর্মী-সমর্থক। এই অবরোধ তোলার জন্য অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী আহসান ইকবালকে নির্দেশ দিয়েছিল ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ পালনে ব্যর্থতার জন্য শুক্রবারই হাইকোর্ট ইকবালের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরু করেছে। এর পরেই শনিবার অবরোধ তুলতে অভিযানে নামেন প্রায় ৮,০০০ নিরাপত্তারক্ষী।

এর আগে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে তাণ্ডব চালিয়েছে কট্টর মৌলবাদীরা। কিন্তু খাস রাজধানী ইসলামাবাদে তাদের এমন হাঙ্গামার নজির খুব একটা নেই। সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়া টেলিফোনে কথা বলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খকন আব্বাসির সঙ্গে। পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন অবরোধকারীরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তারক্ষীরা জলকামান ব্যবহার করেন। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। হিংসা ছড়িয়ে পড়ে লাহৌর, করাচি, পেশোয়ার, রাওয়ালপিন্ডি-সহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে। নিহত হয়েছেন এক নিরাপত্তারক্ষী। অবরোধকারীদের ছোড়া পাথরে জখম হয়েছেন ৯৫ জন নিরাপত্তাকর্মী। এর পরেই হিংসায় লাগাম টানতে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইট এবং খবরের চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পাক সরকার। দলীয় সূত্রের খবর, নওয়াজ শরিফের নির্দেশে প্রধানমন্ত্রী খকন আব্বাসি সংবাদমাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন।

এ দিন লাহৌরে নওয়াজ শরিফের বাসভবনের দিকে যাওয়া সমস্ত রাস্তাগুলি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। লাহৌরের এক পুলিশকর্তা জানান, শরিফের বাড়ির সামনে পুলিশ কম্যান্ডো মোতায়েন করা হয়েছে। ফৈজাবাদে প্রাক্তন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী চৌধুরি নিসারের বাড়িতে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করে জনতা। সেখানে বাহিনীর গুলিতে এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে দাবি সংবাদমাধ্যমের। তবে প্রশাসন সে কথা স্বীকার করেনি। তেহরিক ই লাবাইক-এর মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা লড়াই থেকেও সরছি না। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’

Islamabad Protest Rally Ahsan Iqbal ইসলামাবাদ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy